চীনে দূষণের মাত্রা নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে বলে স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির গতি কমে আসার বিষয়টি আংশিকভাবে হলেও এতে প্রভাব বিস্তার করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। নাসার মানচিত্রে দেখানো হয়েছে, চলতি বছর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমেছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষ চীনের কারখানাগুলোর কার্যক্রম ব্যাপকহারে বন্ধ রাখার পর এই খবর আসলো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চীনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও বেশিরভাগ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনে, যেখানে গত বছরের শেষের দিকে প্রাদুর্ভাবটির উৎপত্তি হয়েছিল।

নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস মূলত মোটর যানবাহন এবং শিল্প কারখানা থেকে নির্গত হয়। গ্যাসটির মাত্রা কমে আসার এই প্রবণতা প্রথম দেখা যায় প্রাদুর্ভাব শুরুর স্থান উহান শহরে। কিন্তু পরে পুরো দেশে একই চিত্র উঠে আসে।

২০১৯ সালের প্রথম দুই মাসের চিত্রের সঙ্গে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের চিত্র তুলনা করেছে নাসা। মহাকাশ সংস্থাটি লক্ষ্য করেছে যে, বায়ু দূষণের মাত্রা কমে আসার এই চিত্র চীনে পরিবহন চলাচল ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এ ছাড়া ওই সময়ে লাখ লাখ মানুষ কোয়ারেন্টিনে গিয়েছিল।

নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বাতাসের মান নিয়ে কাজ করেন ফেই লিউ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমি দেখছি যে, কোনো একটি বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এত বিশাল এলাকা জুড়ে দূষণ এমন নাটকীয়ভাবে কমে গেছে।’

ফেই লিউ জানান, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও তিনি নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড কমে যাওয়ার চিত্র দেখেছিলেন। কিন্তু সেটি আরও অনেক ধীর গতিতে হয়েছিল। নাসা জানায়, অতীতেও চীনের চন্দ্রবর্ষ উদযাপনের সময়ে অর্থাৎ জানুয়ারির শেষ এবং ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে দূষণের মাত্রা কমে এসেছিল। কিন্তু উদযাপন শেষ হওয়ার পর এই মাত্রা আবার বাড়তে থাকে।

মিস লিউ বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় চলতি বছর কমে যাওয়ার এই মাত্রা বেশ চোখে পড়ার মতো এবং এটা দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী ছিল। আমি অবাক হইনি কারণ, অনেক শহর ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।’