বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দিতে বুড়িগঙ্গার তীরে হাজির হয়েছেন ঢাকা-১৪ আসনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আসলামুল হক। আজ বুধবার সকালে দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হন তিনি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে বছিলা সেতুর পশ্চিম পাশে বুড়িগঙ্গার তীরে নিজে এসে চলমান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দেন আসলামুল হক। তবে তার এই বাধা উপেক্ষা করেই অভিযান চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আসলামুল হক যখন ঘটনাস্থলে আসেন তখন তার সঙ্গে অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন লোক সেখানে আসেন। তখন তাদের ধাওয়া দিয়ে এই এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ দুটি এক্সকাভেটর দিয়ে আসলামুল হকের ভরাট করা জায়গায় অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করছে। এ ছাড়া এই সাংসদ বুড়িগঙ্গার যে অংশটুকু ভরাট করেছেন সেই অংশটুকু চিহ্নিত করে লালফিতা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে গড়ে তোলা বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপনাও ভেঙে দিচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ।

কেরানীগঞ্জে বছিলা সেতুর পশ্চিম পাশে চর ওয়াশপুর এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করেছেন সরকারদলীয় এই সাংসদ। এটি তৈরি করতে গিয়ে তিনি নদীর কিছু অংশ দখল করেছেন বলে দাবি বিআইডব্লিউটিএ। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার এখানে অভিযান চালিয়েছিল সংস্থাটি। অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ বলছে, সাংসদের দখলে আছে ৫ একর জায়গা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৩টি স্থাপনা। দ্বিতীয় দিনের মতো আজ সকাল ১০টায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। তবে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে আসলামুল হক কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এ সময় বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আসলামুল হক বলেন, যৌথ জরিপের যে কথা বলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে, তাকে সেই কাগজ না দেখালে কাজ বন্ধ থাকবে। তিনি কাজ করতে দেবেন না।

সাংবাদিকদের এই সাংসদ বলেন, বিদ্যুতের পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করার সময় বিআইডব্লিউটিএ তাকে অনাপত্তিপত্র দিয়েছিল। আবার তারাই বিনা নোটিশে তার এই জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে।

জানতে চাইলে অভিযানে থাকা বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ঢাকা নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, সাংসদ আসলামকে যে জায়গা ব্যবহার করার জন্য তারা অনাপত্তি দিয়েছে সেই জায়গাতে তারা উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে না। সংসদ সদস্য নদীর যে জায়গা ভরাট করেছেন, সেখানে বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযান চলছে।