নিষিদ্ধ ঘোষিত আল্লাহর দলের উত্তরবঙ্গের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুই শীর্ষ জঙ্গী নেতাকে গ্রেফতার করেছেন নীলফামারী পুলিশ। বুধবার(১১ মার্চ) রাতে নীলফামারীর ডিবি পুলিশ,সদর থানা এবং জলঢাকা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে পৃথক স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন-ওই দলের তত্বাবধায়ক সাইফুল আলম(৩৫) ও নীলফামারী জেলার প্রচার সম্পাদক জিকরুল আহম্মদ(৩০) বৃহস্পতিবার(১২ মার্চ)বিকেলে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।তিনি জানান, জলঢাকা পৌর এলাকার বগুলাগাড়ি বারঘড়িয়া গ্রামের মিলন(২৫)এর বাড়িতে নিষিদ্ধ সংগঠনটির গোপন বৈঠক করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সেখানে অবস্থানরত দলের তত্বাবধায়ক সাইফুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়। সে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া রোজারভিটা গ্রামের মৃত. আনছার আলীর ছেলে। দলটির সহ-অধিনায়ক আব্দুল আজিজ তার মামা। তিনি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। ১৯৯৮ সালে মামার হাত ধরে নিষিদ্ধ সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত হন সাইফুল। ২০০৭ সালে দলে বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পান। বর্তমানে দলের ছয় জন তত্বাবধায়কের মধ্যে একজন সাইফুল।পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের ছাড়ারপাড় গ্রামেমের বাড়ি থেকে দলটির নীলফামারী জেলার প্রচার সম্পাদক জিকরুল আহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। সে উক্ত গ্রামের ইমান আলীর ছেলে। এসময় সংগঠনের কাজে ব্যবহৃত চারটি মোবাইল ফোন ও সাতটি বিভিন্ন কোম্পানির সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরো জানান, তারা মূলত ২০০৭ সালে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গী মতিন মেহেদীর আল্লাহর দলের অনুসারী। সরকার এবং গণতন্ত্রের বিরোধী তারা। দলের নেতা মতিন মেহেদীকে আল্লাহর বিশেষ দূত মনে করেন। তাদের বিরুদ্ধে জলঢাকা থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) নিশার আলী তিতুমীর বাদি হয়ে ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।এদিন বিকেলে গ্রেফতারকৃত দুইজনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ এর বিচারক মো. মাসুদ রানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদানের জন্য প্রেরন করা হয়।পুলিশ সুপার আরো বলেন, তারা বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনায় ওই স্থানে গোপন বৈঠকে বসেন। সেখান থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে সাইফুলকে গ্রেফতার করে। এসময় আল্লাহর দলের তিন সদস্য মোঃ মিলন, জাকির হোসেন ও নুরন্নবী পালিয়ে যায়। উত্তরাঞ্চলসহ গোটা দেশে তাদের জঙ্গী নেটওয়ার্ক আছে।সংবাদ সম্মেলনে অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, সদর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম মোমিন, গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি)ওসি আফজালুল হক প্রমুখ।

সুজন মহিনুল,বিশেষ প্রতিনিধি॥