বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ জন। সংক্রমিত হয়েছেন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীও। এই প্রতিকূল অবস্থায় করোনা প্রতিরোধের একমাত্র সমাধান দেশ ‘লকডাউন’ করা বলে মতামত দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আহূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা মানতে এবং আস্থা রাখতেও বলেছেন হাইকোর্ট। সারা দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।

রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ূন কবির পল্লব জানান, আদালত আমাদের রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস জাতীয় শত্রু। করোনা মোকাবিলায় দলমত-নির্বিশেষে এক হয়ে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দলমত-নির্বিশেষে যেমন সকালে একসঙ্গে ঝাপিয়ে পড়েছিল এখনও সেভাবে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের ওপর আস্থা রাখতে হবে। যেসব নির্দেশনা দেবে তা মেনে চলতে হবে।’

ব্যারিস্টার হুমায়ূন জানান, আদালত আরও বলেছেন, ‘তাইওয়ান চীনের পাশের দেশ হওয়া সত্ত্বেও তারা কীভাবে করোনা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে সেই মডেলটি অনুসরণ করতে হবে। করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক সমস্যা। যেহেতু এখনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি তাই এর একমাত্র সঠিক সমাধান হিসেবে পুরো দেশে লকডাউন করা উচিৎ।’

এ পর্যবেক্ষণের পর রিটটি নিষ্পত্তি করে দেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব। এর আগে করোনা পরীক্ষার জন্য বিশেষ ল্যাব স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে গত ১৮ মার্চ রিটটি দায়ের করেছিলেন তিনি।

এদিকে দেশে করোনাভাইরাস নিরোধে বিভিন্ন হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের কেন জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা আদালতের রুল জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।