করোনা ভাইরাসের সংক্রমন প্রতিরোধ করতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে বন্দিদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ। বুধবার থেকে এ সেবা পেয়ে কারাবন্দিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন কারা কর্মকর্তারা। তবে অল্প সময়ে বেশি সেবা দিতে হলে টেলিফোন বুথ বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেলার মো. বাহারুল ইসলাম জানান, করোনা সংক্রমন পরিস্থিতে বুধবার থেকে কারাগারে চালু হয়েছে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ। এতে বন্দি ও তার স্বজনরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দুইটি সেট থেকে প্রতি বন্দি ৫মিনিট করে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। এরজন্য কারাগারে তাদের পিসি একাউন্ট থেকে ৫টাকা করে কেঁটে নেয়া হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে একবার তারা এ সুযোগ পাবেন। তবে হাজতি বন্দিদের সঙ্গে ১৫দিনে একবার এবং কয়েদি বন্দিদের সঙ্গে এক মাসে একবার তাদের স্বজনদের স্বাক্ষাৎকারের সুযোগ রয়েছে। সরকারি আদেশেই বুধবার থেকে বন্দিদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের টেলিফোনে কথা বলার সিস্টেম চালু হয়েছে। এ কারাগারে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বন্দি রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা আবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫ঘন্টা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন বন্দিরা। শুরুর দিন ৬০জনের কথা হয়েছে। আর সরাসরি স্বাক্ষাৎপ্রার্থী ছিলেন ৪৫জন। কারাগারে সবাইকে টেলিফোন সেবা দিতে গেলে টেলিফোন সেট বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।এজন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে।

ওই কারাগারের স্বাক্ষাতপ্রার্থী টাঙ্গাইলের মো. জাহিদ, ভাষানটেক এলাকার মোখলেছুর সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এতে কারাবন্দি ও তাদের স্বজনদের মধ্যে অনায়াসে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হলো। দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে দুরদুরান্ত থেকে তাদের কষ্ট করে আসতে হবে না।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগারের সুপার মো. সফিকুল ইসলাম খান জানান, প্রথম দিনে এ হাইসিকিউরিটি কারাগারে দুইটি টেলিফোন সেটের মাধ্যমে অর্ধশতাধিক বন্দি টেলিফোন সেবা গ্রহণ করেছেন। আর স্বাক্ষাৎ প্রার্থী ছিলেন মাত্র ৭০জন। তিন সহ¯্রাাধিক বন্দির জন্য দুইটি সেটে অপ্রতুল। কম সময়ে বেশি এ সেবা দিতে হলে আরো টেলিফোন বুথ/সেট বাড়ানো প্রয়োজন মনে করেন তিনি।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, উদ্বোধনী একইদিন এ কারাগার থেকে একটি সেটে ৩০জন নারী বন্দি স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এদিন স্বাক্ষাৎ প্রার্থী ছিলেন মাত্র ৭০জন। তার কারাগারে বন্দি সংখ্যা হলো ৮৪৭জন।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর সুপার রতœা রায় জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে এ কারাগারে একটি টেলিফোন সেট থেকে কথা বলা শুরু হয়েছে। এ কারাগারে দেড় হাজারের উপর বন্দি রয়েছেন। কয়েকদিন গেলে সেট বাড়ানো প্রয়োজন হবে কি-না তা বুঝা যাবে। তবে এ সেবা সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বন্দিরা তাদের স্বজনদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলতে পেরে খুবই খুশী।