গাজীপুর মহানগরবাসীকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য বিপুল পরিমান মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাবস, দেহের তাপমাত্রা মাপার থার্মাল স্ক্যনার ও পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট)সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মাঝে বিতরণ করেছেন সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

শুক্রবার দুপুরে গাসিক মেয়র এসব সামগ্রী গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামানের কাছে হস্তান্তর করেন। বৃহষ্পতিবার চীন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এসব সামগ্রীসহ করোনা ভাইরাস শনাক্ত করণের কিট তিনি সংগ্রহ করেন।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, গাজীপুর মহানগরবাসীকে এমুহুর্তে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেওয়া একজন মেয়র হিসেবে আমার প্রধান দায়িত্ব। তাই নগরবাসীকে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপত্তা দিতে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের ৩০ হাজার কীট, ১০ লাখ মাস্ক ও ৮হাজার পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) বৃহষ্পতিবার চীন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে আনা হয়। দ্বিতীয় দফার চালানে আরো ২০ হাজার কীট শীঘ্রই এসে পৌছবে। শুক্রবার মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাবস, থার্মাল স্ক্যনার ও পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট)সহ করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার উপকরণ সামগ্রী শুক্রবার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। তবে করোনাভাইরাস শনাক্ত করণের কীট সরকারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। শুধু নগরবাসীকেই নয়, পুরো জেলাকে সুরক্ষার জন্য জেলাব্যাপী এসব সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এ ছাড়াও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে নিজ ঘরে অবস্থানরত দুঃস্থ্যদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

গাসিক মেয়র বলেন, শিল্প-কারখানা ও শ্রমিক অধ্যুষিত গাজীপুরে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এখানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এ ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে দ্রুত বিস্তারলাভ করতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভয়ংকর এ ভাইরাসের আক্রমন থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই তিনি এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু নগরবাসীকেই নয়, পুরো জেলায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক এসব উপকরণ বিতরণে তার পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘যেখানে সংক্রমণ সেখানেই সীমাবদ্ধ’ এমন কর্মসূচী হাতে নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের পুরো জনবলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, শিল্প অধ্যূষিত গাজীপুর মহানগরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হাটবাজার, রাস্তা ও মোড়সহ ৫ হাজার স্থানে প্লাস্টিকের ড্রাম বসিয়ে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব স্থানে প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার মানুষ হাত ধোঁয়ার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। পাশাপাশি সড়ক মহাসড়কগুলোতে সিটি কর্পোরেশনের পানির গাড়ির সাহায্যে জীবানুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি করতে এবং কার্যকরী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ৫৭টি এবং ৮টি থানা এলাকার প্রতিটিতে একটি করে ৮টিসহ সর্বমোট ৬৫টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে না থেকে কোনো প্রবাসী এলাকায় ঢুকে পড়ল কিনা, অপ্রয়োজনে কোনো নাগরিক রাস্তাঘাট, হাট-বাজারে ঘোরাফেরা করছেন কিনা- এসব মনিটর করবেন এ কমিটির সদস্যরা। অপরদিকে করোনা ভাইরাসের এই আতঙ্কের মধ্যেই ডেঙ্গু জ্বর নগরবাসীকে যাতে কাবু করতে না পারে সেজন্য ইতোমধ্যেই এডিস মশা নির্মূলে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় সংখ্যক কোরিয়ান ফগার মেশিন আমদানী করা হয়েছে। কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে এসব মেশিন পাঠানো হচ্ছে।