মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে তৈরি পোশাক খাত। এ অবস্থায় পোশাকমালিকদের স্বস্তির সংবাদ দিয়েছে সুইডেনভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম। প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে, কারখানায় ইতোমধ্যে যেসব পোশাক তৈরি সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো তারা নিয়ে যাবে। একই সঙ্গে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডটি বলেছে, তারা চুক্তি অনুযায়ী এসব পোশাকের দাম সরবরাহকারীকে পরিশোধ করবে। এমনকি দাম কমানোর জন্য দর–কষাকষি করবে না।

এইচঅ্যান্ডএম ঢাকা কার্যালয় রোববার (২৯ মার্চ) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এইচঅ্যান্ডএম বলেছে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সরবরাহব্যবস্থার পাশাপাশি পুরো প্রতিষ্ঠানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে সব পক্ষের সঙ্গে ব্যবসা পর্যালোচনা করছে এইচঅ্যান্ডএম।

জানতে চাইলে এইচঅ্যান্ডএমের বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়ার প্রধান জিয়াউর রহমান বলেন, করোনার কারণে অনেক ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কারখানায় প্রস্তুত হয়ে থাকা পণ্যও নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বলে আমরা শুনছি। তবে এইচঅ্যান্ডএম সেই পথে হাঁটব না। কারখানায় ইতিমধ্যে যেসব পোশাক তৈরি হয়ে আছে সেসব আমরা নেব। চুক্তি অনুযায়ী সেসব পোশাকের দাম পরিশোধ করব। মূল্যছাড়ের জন্য দর–কষাকষি করব না। তিনি আরও বলেন, ইউরোপের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন ক্রয়াদেশ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছি আমরা।

বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বা ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার পোশাক কিনে থাকে এইচঅ্যান্ডএম। সেই হিসাবে বাংলাদেশি পোশাকের বড় ক্রেতাদের মধ্যে অন্যতম সুইডেনভিত্তিক এই ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। গত অর্থবছর বাংলাদেশ ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।

করোনার কারণে প্রতিদিনই বাংলাদেশি পোশাক কারখানার ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হচ্ছে। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, রোববার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ১ হাজার ২৫ কারখানার ৮৬ কোটি ৪১ লাখ পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এতে ২৮১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিজিএমইএ দাবি করেছে, করোনার কারণে বিপুল পরিমাণ ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ায় ২০ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অবশ্য শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া কয়েকটি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর।