ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি মসজিদে হওয়া ধর্মীয় সমাবেশ থেকে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। মারকাজ নিজামুদ্দিন নামে পরিচিত ওই মসজিদটি তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের কেন্দ্রীয় দপ্তর হিসেবে পরিচিত। আর নিজামুদ্দিনে ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য মাওলানা সাদ ও অন্যান্য উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ভারতের ১৮৯৭ সালের এপিডেমিক ডিজিজ অ্যাক্ট, ১৮৯৭ ও ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্য ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তাবলিগ-জামাতের ওই সমাবেশে যোগ দিয়ে বহু মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর এরই মধ্যে সেখান থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মসজিদটিতে একটি ধর্মীয় সমাবেশ উপলক্ষে গত মাসের মাঝামাঝি অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার লোক সমবেত হয়েছিলেন। শহরের অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের ডরমিটরিতে তারা সবাই গাদাগাদি করে ছিলেন। সেখানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুসলমানরা যেমন ছিলেন, তেমনি বহু বিদেশি নাগরিকও ছিলেন। মারকাজ নিজামুদ্দিনে অবস্থানরত প্রায় তিনশ ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে সোমবার দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ২৪ জনের পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।

ওই সমাবেশে যোগ দিয়ে নিজ রাজ্যে ফিরে যাওয়ার পর গত সোমবার তেলেঙ্গানাতে ছয়জন ব্যক্তি করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন। আর এর আগে নিজামুদ্দিন থেকে ফিরে গিয়ে কাশ্মীরের এক ধর্মীয় নেতাও শ্রীনগরে কয়েকদিন আগে মারা যান। এ ছাড়া তিনি কাশ্মীরে ফেরার আগে উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দেও ঘুরে যান এবং কাশ্মীরে গিয়েও বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সমাবেশে যোগ দেন।

এদিকে তামিলনাডুতে দুটি এবং দিল্লিতে আরও একটি করোনাভাইরাসজনিত মৃত্যুর সঙ্গেও দিল্লির এই তাবলীগ জামাতের সংযোগ টানা হচ্ছে। যদিও সেই দাবি এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করেনি কর্তৃপক্ষ। নিজামুদ্দিনের ঘিঞ্জি এলাকার ভেতর অবস্থিত ওই ছয়তলা মসজিদ ভবনটিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুলিশ তালাবদ্ধ করে দেয়। তখনো ওই মসজিদের ভেতবে সাতশর মতো লোক ছিলেন। পরে তাদের সবাইকে সরকারি বাসে করে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়।