খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের (সিএইচসিপি) কর্মীরা সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছেন। যেখানে সারা বিশ্ব তথা বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রকম প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা। ব্যাক্তিগত সুরক্ষার জন্য প্রত্যেকটি সরকারি হসপিটালের ডাক্তার নার্সদের জন্য দেওয়া হয়েছে পিপিই। সেখানেই যারা তৃনমূল পর্যায়ে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসতেছে তাদের জন্য নেই কোনো পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এর ব্যবস্থা। তারা একরকম ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের দিকে তাকানোর যেন কেউ নেই।

বিশেষ করে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পর শহর অঞ্চল থেকে গ্রামে ফিরেছে হাজার হাজার মানুষ। রয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রবাসীও, যার ফলে গ্রাম পর্যায়ে এই ক্লিনিক গুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যাও। আগে যেখানে চিকিৎসা সেবা দিতে হতো দিনে ২৫/৩০ জন রোগীকে আর এখন বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বেড়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে দৈনিক ৩৫/৪০ জনের উপরে। বর্তমানে বেশিরভাগ রোগীই আসতেছে জ্বর ও শর্দি কাশির সমস্যা নিয়ে। সহজে ও দ্রুত সেবা পাওয়া যায় বলে রোগীরা ভীড় করেতেছে এই সব ক্লিনিকে। এক প্রকার আতংকের মধ্যেই চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে এই সব ক্লিনিকের কর্মীদের।
এই ক্লিনিকের কর্মীদের জন্য মাস্ক থেকে শুরু করে দেওয়া হয়নি হেক্সিসলও। সুরক্ষার জন্য দেওয়া হয়নি কোনো প্রকার পারসোনাল ইকুইপমেন্ট।

মহালছড়ি উপজেলায় বর্তমানে রয়েছে ১২ টি কমিউনিটি হেলথ কেয়ার। ১২ টি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ১২ জন হেলথ প্রোভাইডার। মাইসছড়ি যন্ত্রনাথ কার্বারী পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের এক সাস্থ্য কর্মী বলেন আমরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের উদ্যোগে নিজের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ও সাবান কিনে রোগীদের সেবা দিচ্ছি। সরকার বা কতৃপক্ষের কাছে থেকে কোনো প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী পাইনি।

মহালছড়ি কেরেংগানালা কমিউনিটি ক্লিনিকের এক সাস্থ্য কর্মী বলেন এই কয়েকদিনে ঢাকা, চট্টগ্রামের মত শহর থেকে অনেক লোক গ্রামে ফিরেছে। যার ফলে ক্লিনিকে আগের ছেয়ে রোগীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। বেশিরভাগ রোগীই জ্বর-শর্দি ও কাশির মত সমস্যা নিয়ে ক্লিনিকে আসতেছে। কারন তাদের মধ্যেও করোনা ভাইরাস নিয়ে এক প্রকার ভীতি তৈরি হয়েছে। তাদেরকে কোনো প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া আতংকের মধ্য দিয়ে আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। কারন এই সব রোগীদের মধ্যে কেউ যদি করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোনো রোগী হয়, তাহলে আমরাও সংক্রমিত হবো। তিনি সরকারের কাছে প্রত্যেকটি ক্লিনিকের প্রোভাইডারদের জন্য পিপিই সরবরাহের আবেদন জানান।

এই বিষয়ে কথা বলার জন্য মহালছড়ি সরকারি হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ধর্নিষ্টা চাকমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে আপাতত সুরক্ষা সামগ্রীসমূহ কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের দেয়া হয়েছে। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে সরকারি কোন অনুমতি না পাওয়ায় কর্তব্যরত প্রোভাইডারগণদের সুরক্ষা সামগ্রীসমূহ দেয়া হচ্ছে না। সরকারি অনুমতি পেলে প্রতিটি সুরক্ষা সামগ্রীসমূহ সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের মাঝে বন্টন করে দেয়া হবে।

মিল্টন চাকমা কলিন (মহালছড়ি) খাগড়াছড়ি