দেশে একদিনে সর্বাধিক করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৩৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। এর আগের দুই দিন সংক্রমণের হার কম ছিল। গতকাল করোনায় আক্রান্ত হয় ৫৮ জন। তার আগের দিন আক্রান্ত হয়েছিল ৯৪ জন।

আজ রোববার দুপুর আড়াইটায় মহাখালী থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, ‘নতুন আক্রান্ত এই ১৩৯ জনের মধ্যে ৯৬ জন পুরুষ এবং ৪৩ জন নারী।’

জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণ করে সেব্রিনা বলেন, ‘সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঢাকা শহরে রয়েছে ৬২ জন এবং ঢাকা শহরের বাইরে অন্যান্য এলাকায় বাকিরা। নতুন সংযোজিত জেলা লক্ষীপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও এবং ঝালকাঠি।’

‘লক্ষীপুর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও এবং ঝালকাঠি- এই ৪টি জেলায় আমরা তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছি যাদের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে তারা গত এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা থেকে অথবা নারায়ণগঞ্জ থেকে ওই সমস্ত এলাকাগুলোতে গিয়েছেন। সেজন্য আমরা বারবার সবাইকে সতর্ক করছি এই সময় আপনারা ভ্রমণ করবেন না। আপনারা বাড়িতেই থাকুন।’

আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘বর্তমানে সর্বোচ্চ সংখ্যক সংক্রমিত রোগী রয়েছেন ঢাকা শহরে শতকরা ৫০ ভাগ। এরপর ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় রয়েছে শতকরা ৩৫ ভাগ। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিভাগ শতকরা ৬ ভাগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ জন। সর্বমোট সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন ৩৯ জন। বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই যে তিনজন সংক্রমণমুক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে দুজন নারী এবং একজন পুরুষ। তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। এই চিকিৎসক একজন রোগীকে সেবা দেওয়ার সময় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’

সেব্রিনা বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জন মৃত্যুবরণ করেছে, যাদের মধ্যে কোভিডের সংক্রমণ নিশ্চিত করা গেছে। সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৩৪।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন মৃত্যু হওয়া ৪ জনের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা। তাদের বয়স ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে দুজন। ৬০ বছর বয়সের মধ্যে একজন এবং ৭০ থেকে ৮০ বছর বয়সের মধ্যে ১ জন। এই ৪ জনের মধ্যে দুজন ঢাকার এবং ২ জন ঢাকার বাইরের।’

গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে বেড়েই চলেছে আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা। তবে গত দুই দিন সংক্রমণের হার কমে এসেছিল। শুক্রবার করোনায় আক্রান্ত হয় ৫৮ জন। তার আগের দিন আক্রান্ত হয়েছিল ৯৪ জন। এর আগের দিন বুধবার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল, ১১২ জন। আজ নতুন করে সর্বাধিক রোগী শনাক্ত হওয়ায় সর্বমোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২১ জনে। এ রোগে সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের।