রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিল্লাহ ফার্মা ও খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় ডাকাতির ঘটনায় পলাতক আসামি আলী হোসেন টিটু বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, টিটু দুই ডাকাতির ঘটনার ‘মূলহোতা’। গতকাল সোমবার গভীর রাতে মোহাম্মদপুরের বসিলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিমের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনি মারা যান।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার আনিস উদ্দিন জানান, গত ১ এপ্রিল রাত পৌনে ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের কলেজ গেটে বিল্লাহ ফার্মা ও ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় একই স্টাইলে দুটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা প্রথমে একটি পিকআপে করে মূখে মাস্ক ও গামছা পেঁচিয়ে আসে। দোকানে ঢুকে চাপাতি, দা ও লোহার রডের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক মামলা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম ও পল্লবী জোনাল টিম মামলা দুটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, লাজ ফার্মায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে গত রোববার ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি ফার্মেসিতে ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত এমন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- চক্রের অন্যতম এক সদস্য সোহেল ও তার সহযোগী আক্তার হোসেন ওরফে সোহরাব, নেওয়াজ, শাওন হোসেন ওরফে শাহীন এবং মেহেদী হাসান ওরফে রাজু। তাদের কাছ থেকে চাপাতি, দা ও লোহার রডসহ উদ্ধার করা হয় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পিকআপ এবং নগদ পাঁচ হাজার টাকা।

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়- টিটু এই ডাকাত চক্রের মূলহোতা। তার নেতৃত্বে ডাকাতিগুলো সংঘটিত হয়েছে। গতকাল সোমবার  টিটুর অবস্থান মোহাম্মদপুর এলাকায় শনাক্ত করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে মোহাম্মদপুরের বসিলা তিন রাস্তা মোড় সংলগ্ন এলাকায় অভিযানে যায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। এ সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান তিনি। ডাকাত দলটির অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত টিটুর গ্রামের বাড়ি সিলেট। রাজধানীর ডেমরায় থাকতেন তিনি। গ্রেপ্তার সোহেল ও নিহত টিটু ডাকাত দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি করা অর্থের ৪০ ভাগ পেতেন তারা। বাকি ৬০ ভাগ টাকা অন্যদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হতো। সোহেলের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। থাকতেন মিরপুর-১ নম্বর এলাকায়। কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সোহরাবের বাড়ি শরীয়তপুরে ও শাহিনের বাড়ি বরিশালে। গ্রেপ্তার নেওয়াজ থাকতেন মিরপুর চিড়িয়াখানা এলাকায়। ছিনতাই কাজে তারা যে দুটি মিনি ট্রাক ব্যবহার করতেন সেগুলোও ছিনতাই করা।

তারা একটি মিনি ট্রাক ছিনতাই করে শাহ আলী এলাকা থেকে এবং অন্যটি আশুলিয়া-টঙ্গী রোড থেকে। ট্রাক দুটি নিয়ে সপ্তাহে তারা ৩-৪ দিন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বের হতেন। রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, কালসি, বেড়িবাঁধ, আদাবর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, তুরাগ ছাড়াও ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে তাদের টার্গেট রূপগঞ্জ ও কাঁচপুর ব্রিজ এলাকা ছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ।