যক্ষ্মার বিসিজি টিকা দেওয়া থাকলে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায় বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। নিজেদের ওয়েবসাইটে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিসিজি টিকার কোনো প্রভাব আছে কি না- তা জানতে দুটো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ফলাফল পাওয়া গেলে ডব্লিউএইচও তা পর্যালোচনা করে দেখবে।

তবে তেমন প্রমাণ পাওয়ার আগেই বাজারে বিসিজি টিকা কিনতে মানুষের হিড়িক পড়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে শিশুদের যক্ষ্মা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য টিকার ঘাটতি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সংস্থাটি বলছে, প্রমাণ পাওয়ার আগেই করোনার প্রতিষেধক হিসেবে বিসিজি টিকা ব্যবহারের পরামর্শ দেবে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে যেসব দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি, সেখানে শিশুদের বিসিজি টিকা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ডব্লিউএইচও। এ ছাড়া অন্যান্য রোগের ওষুধ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর বলে যেসব তথ্য প্রচার হয়েছে তার কোনোটিরই সত্যতা এখনো প্রমাণিত নয় বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির (এনওয়াইআইটি) গবেষকদের একটি সমীক্ষার প্রাথমিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মার্চের শেষে বিজিসি টিকা নিয়ে খবরটি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসে। ওই সমীক্ষায় দেখানো হয়, যেসব দেশে নাগরিকদের বিসিজি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে সেগুলোতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু তুলনামূলকভাবে কম। সেই খবর সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এমন সব পোস্ট আসতে থাকে, যাতে মনে হয়, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বিজিসি টিকার সুফল হয়তো প্রমাণিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ ধরনের সমীক্ষায় অনেক ধরনের দুর্বলতা থেকে যেতে পারে। একেক দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের চিত্র একেক রকম। কোভিড-১৯ পরীক্ষার হারেও অনেক পার্থক্য। তা ছাড়া জনঘনত্ব ও আবহাওয়া অনুযায়ী একেক দেশে একেক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকতে পারে।