করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের বর্তমান পরিস্থিতিতে গাজীপুরের শ্রীপুরে অসহায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক না পাওয়ায় ছাত্রলীগের কর্মীরা কৃষকের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা পর্যস্ত শ্রীপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কাওরাইদ ইউনিয়নের গুনিয়া ফকির পাড়া গ্রামের কৃষক সারফুল মিয়ার জমির পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দেয় তারা।

স্থানীয়রা জানান, শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের গুনিয়া ফকির পাড়া গ্রামের সারফুল কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে শ্রীপুরে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিক না পাওয়ায় নিজ জমির পাকা ধান কাটতে পারছিলেন না কৃষক সারফুল। তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামের সুলতান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের উদ্যোগে স্থানীয় ছাত্রলীগের ১৩ জন নেতাকর্মী শনিবার দিনভর ওই কৃষকের এক বিঘা জমির পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। ছাত্রলীগের এ কার্যক্রম স্থানীয়দের বেশ প্রশংসা যুগিয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নির্দেশ দিয়েছে কৃষকদের পাশে থাকতে। ছাত্রলীগ যেকোনো মানবিক সঙ্কটে সাধারণ মানুষের পাশে থাকে। করোনা মোকাবেলায় মাঠে থেকে সর্বোচ্চ কাজ করছে ছাত্রলীগ। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পাই শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষক সারফুল তার পাকা ধান কাটতে পারছে না। কালবৈশাখী মাস, যে কোনো সময়ে ঝড় বৃষ্টি হলে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা ছাত্রলীগের ১৩ জন নেতাকর্মী কাঁচি-মাথাল (ধান কাটার সরঞ্জাম) নিয়ে হাজির হই। এদের মধ্যে গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সদস্য আলমগীর হোসেন মারুফ, শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক সজীব হাসান,ছাত্রলীগ নেতা ফাহাদ হোসেন বাদশা, সৈয়দ মিজানুর রহমান, মামুন মিয়া, শাকিল হাসান এবং তেলিহাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক সজল হাসান রানা রয়েছে। এমনিভাবে অন্য কোন কৃষক যদি শ্রমিকের অভাবে ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারেন, খোঁজ পেলে আমরা তাদেরকেও সহযোগিতা করবো। আমরা সবসময় কৃষকসহ সাধারণ মানুষের পাশে সর্বদা আছি এবং থাকবো।

কৃষক সারফুল ইসলাম জানান, প্রথমে আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না, সুলতান ভাইসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা বিনা পারিশ্রমিকে আমার একবিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলে দিবে। তারা জমির ধান কেটে বাড়িতে তুলে দেওয়ার পর আমার বিশ^াস হয়েছে। তারা ধান কেটে দেয়ায় আমার অন্যরকম আনন্দ লাগছে, তাদেরকে নিয়ে আমার গর্ব হচ্ছে। কাজ শেষে মুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিদায় দেওয়া হয়।