নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট)-এর সেকশন কমান্ডার মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৬৪ বছর। রোববার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় তিনি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। এক সপ্তাহ পূর্বে তিনি এই হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাকালীন সময়ে তিনি আইসিইউ-তে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা, চার ভাই, এক বোন এবং পরিবারের বিপুল সংখ্যক সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব রেখে গেছেন। তার মেঝো কন্যা এবছরই ডাক্তারী পাশ করেছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে তিনিই প্রথম এবং এনওয়াইপিডি-তে সর্বোচ্চ সেকশন কমান্ডার পদে আসীন ছিলেন। তার মৃত্যু সংবাদে বাংলাদশিশী কমিউনিটি এবং এনওয়াইপিডি’র সদস্যদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর ইউএনএ’র।

মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী দীর্ঘদিন চাকুরীকালে নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়নতার জন্য এনওয়াইপিডি থেকে সম্মানিত হয়েছেন। তার পরিবারের সবাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। তিনি ১৯৮২ সালে অভিবাসী হন। আদি বাড়ী ব্রক্ষাণবাড়িয়া হলেও তাঁর জন্ম ও বেড়ে উঠা ঢাকার রাজাবাজারে। মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের পঞ্চম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন মুজিব চৌধুরী। পরিবার ও তার বন্ধুমহলে ‘নিনি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

জানা গেছে, মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী ১৯৯০ সালে নিউইয়র্ক পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে যোগ দেন। তিনি প্রথম দিকের একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান ট্রাফিক এজেন্ট। তিনি-ই একমাত্র বাংলাদেশী যিনি এখন পর্যন্ত এনওয়াইপিডি’র এনফোর্সমেন্ট কমান্ডার-এর সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি সিটির ট্রাফিক সুপারভাইজার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। পরবর্তীতে নিজের কর্ম দক্ষতায় ২০০৯ সালে ট্রাফিক ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালে চাকুরী জীবনের ২০ বছরে সঠিক উপস্থিতির জন্য তিনি সম্মাণনা পদক লাভ করেন। ২০১৮ সালে তিনি সেকশন কমান্ডার হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। মরহুম মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী ব্যক্তিগত জীবনে একজন ধর্মপরায়ন ও পরোপকারী ছিলেন। সন্তান, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ছিলো তার সীমাহীন ভালোবাসা ও মমত্ববোধ। কুইন্স জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত তার ছোট ভাই ডা. সাইদুর রহমান চৌধুরী মৃত্যু পর্যন্ত সার্বক্ষনিক তার পাশে ছিলেন। মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে তার রুহের শান্তি কামনায় সবার দোয়া চেয়েছেন।

শোক প্রকাশ

মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরীর ইন্তেকালে তার আত্মীয়, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. ওয়াজেদ এ খান গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের তার সহপাঠি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীগণও শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে বাংলাদেশ পুলিশ কমিউনিটির ‘আইকন’ হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ-আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশন (বাপা)। দোহার উপজেলা সমিতি ইউএসএ ইনক’র সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক দেওয়ান ময়েজ সোহেলের ভায়রা ভাই মোহাম্মদ চৌধুরীর ইন্তেকালে দোহার উপজেলা সমিতির পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহী আত্বার মাগফেরাত কামনা সহ শোকার্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে।