গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে তালপাতা দিয়ে বানানো একটি ঝুপড়িঘরে কোয়ারেন্টিনে রাখা ঢাকাফেরত ওই নারী হাসপাতালকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়।পরে তাদের ঘরের পাশে একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে রাখা হয়। এছাড়া পুলিশ তালপাতার সেই ঝুপড়িঘর ভেঙে দিয়েছে। এ ঘটনায় ‘হাসপাতালকর্মীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হল তালপাতার ঝুপড়িতে’ শিরোনামে সোমবার সংবাদ প্রকাশ করেছে। এরপরই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। ওই নারীর (২১) বাড়ি কোটালীপাড়া উপজেলার লখণ্ডা গ্রামে। ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসকের অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে চাকরি করেন তিনি।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর ওই হাসপাতালের কয়েকটি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। সে কারণে গত মঙ্গলবার বাড়ি ফেরেন ওই নারী। পরে তার ফেরার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী জড়ো হয়।পরে বাড়ির প্রায় ৪০০ মিটার দূরে পুকুরপাড়ে তালপাতা দিয়ে ঝুপড়িঘর তৈরি করে সেখানে তাকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য করা হয় বলে ওই নারী জানান। মেয়েটির মায়ের অভিযোগ,উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত বাড়ৈ চাপ সৃষ্টি করে তার মেয়েকে তালপাতা দিয়ে বানানো একটি ঝুপড়িঘরে রেখেছিলেন। তিনি ওই আওয়ামী লীগ নেতার শাস্তি দাবি করেন। তবে এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা প্রশান্ত বাড়ৈ সবার মতামত নিয়ে এই ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানান।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, “ঝুপড়ি ঘর থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে তাদের ঘরের পাশে নতুন একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে তাকে রাখা হয়েছে। এছাড়া ওই ঝুপড়িঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

এ ঘটনায় ওই নারী স্বাস্থ্যকর্মী অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমি ওই নারী স্বাস্থ্য কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাকে আমরা কিছু খাদ্য সহায়তা দিয়েছি এবং কোনো সমস্যা হলে আমাদের জানাতে বলেছি।”

ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর পাঠানো হবে এবং এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ইউএনও।