রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের অবহেলায় কর্মকর্তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার প্রধানমন্ত্রীকে এ চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার লিখেন, ‘আমার মায়ের মৃত্যুর পর জীবনে প্রথমবারের মতো আপনার কাছে চিঠি লিখছি এবং আমার মায়ের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করছি।’

চিকিৎসা অবহেলায় মায়ের মৃত্যুর বর্ণনা দিয়ে চিঠিতে জিয়াউদ্দিন লিখেন, আমার মা মাহমুদা খানম (৭৫) ৫ এপ্রিল প্রচণ্ড সর্দি-কাশিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ১১ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য নেওয়া হলে দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল তাকে ভর্তি না করিয়ে ফেরত পাঠায়। পরে তাকে উত্তরার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

মাহমুদা খানমের শ্বাস-প্রশ্বাসে কৃত্রিম সহায়কের প্রয়োজন থাকায় ১২ এপ্রিল কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসার পর তাকে সেখান থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১৩ এপ্রিল অপর নমুনা পরীক্ষায় মাহমুদা খানমের কোভিড-১৯ পজেটিভ এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্বজনদের চাপ দিতে থাকে। দুপুর ২টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাহমুদা খানমকে ভেন্টিলেশন খুলে নিলে তাকে কুয়েত মৈত্রী ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে স্থানাস্তর করা হয়। সেখানে ২৩ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

চিঠিতে বলা হয়, ইউনাইটেড হাসপাতাল যেভাবে লাইফ সাপোর্টে থাকা একজন রোগীকে বলপ্রয়োগে সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে তা নজিরবিহীন, অনৈতিক ও বেআইনি। এদিকে ইউনাইটেড হাসপাতালের কমিনিকেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভলপমেন্ট ডিরেক্টর ডা. শাগুফা আনোয়ার দাবি করেন, পরিবারে সঙ্গে আলোচনা করেই হাসপাতাল থেকে মাহমুদা খানমকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য জাতীয় গাইডলাইন আমরা মেনে চলি যাতে অন্য সাধারণ রোগীরা এতে সংক্রমিত না হন। কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমাদের হাসপাতাল নির্ধারিত নয়।’