যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার সারাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এ তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতমবুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেপালের লুম্বিনী কাননে।

অন্য বছর রাজধানীতে বুদ্ধ পূর্ণিমার মূল আয়োজন হয় সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার ও মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে। সকালে সংগীতের মধ্য দিয়ে বুদ্ধ বন্দনার পর আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এর পর ভক্তরা আসতে শুরু করেন বিহারে। স্নান শেষে শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত হন তারা। এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে জনসমাগমের কোনো কর্মসূচি ছিল না। এবার বুদ্ধ পূর্ণিমার অনানুষ্ঠানিক কর্মসূচি পালন করা হয় বিভিন্ন বিহারে।

গতকাল বুধবার বিহারে অবস্থানরত ভিক্ষুরাই কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পূজা, বন্দনা, সূত্রপাঠসহ ধর্মীয় কার্যাবলি সম্পন্ন করেন। অন্যরা নিজ নিজ বাড়িতে থেকে ধর্মীয় কাজ সারেন।

বৌদ্ধ ধর্মমতে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এ তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতমবুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেপালের লুম্বিনী কাননে। এ রাতেই তিনি বোধিজ্ঞান লাভ করেছিলেন ভারতের বিহার রাজ্যের বুদ্ধগয়ায়। এ ছাড়া গৌতমবুদ্ধের মৃত্যুও হয়েছিল এ রাতেই। আর এ কারণেই এ তিথিকে বলা হয় ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা। বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সারাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা দিনটি পালন করেন।

দিবসটি উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বিশ্বব্যাপী নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট মহামারীর ফলে এ বছর বুদ্ধ পূর্ণিমা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদযাপিত হবে।

‘আমি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সবাইকে নিজ নিজ ঘরে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে এ উৎসব উদযাপনের আহ্বান জানাচ্ছি,’ বাণীতে বলেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ‘দেশে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে সমুন্নত রাখতে বৌদ্ধ ধর্মের নেতাদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণে বর্তমান বিশ্ব বিপর্যস্ত। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এ প্রেক্ষাপটে সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে এবার বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনের আহ্বান জানাচ্ছি।’