মহিপুরে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সরকারী জমিতে বহুতল পাকা ভবন নির্মাণ করছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা। মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের লক্ষীর হাট একটি গুরুত্বপুর্ণ সাপ্তাহিক বাজার। আর এই বাজারের মধ্যেই পুকুর ভরাট করে বহুতল পাকা স্থাপণা নির্মাণ করলেও ইউনিয়ন ভূমি অফিস রহস্যজনক কারনে নিরবতা পালন করায় বাজার ব্যবসায়ীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সরকারী জমিতে কাঁচা ও আধা পাকাঁ ঘর তুলে বসবাসের পাশাপাশি তারা ব্যবসা করে আসছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুর রশিদ সরদার টিনের ঘরের জায়গায় পুকুর দখল করে পাঁকা স্থাপণা নির্মাণ করায় তারাও এখন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদারের মৌখিক অনুমতি ক্রমে তিনি স্থাপণা করছেন বলে রশিদ সরদার জানান। নিষেধাজ্ঞা কৃত সরকারী জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণে অনুমতি দেয়ার কথা অস্বীকার করে তহসিলদার আঃ আজিজ বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ ক্রমে স্থাপণা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুর রশিদ সরদার লক্ষী বাজারের মধ্যস্থানে সরকারী জমি ও পুকুর দখল করে দীর্ঘবছর ধরে টিনের ঘর তুলে অবৈধ ভাবে বসবাস করে আসছে। বর্তমানে সেখানে টিনের ঘরের স্থলে বহুতল একটি পাকা স্থাপণা নির্মাণ করছেন। সরকারী খাস পুকুর ভরাট করে পাঁকা স্থাপণা নির্মাণ করায় স্থানীয়রা কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে বহুতল ভবণ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিছুদিন ভবণ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলেও বর্তমানে করোনা মহামারির সময়ে লকডাউনের সূযোগে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহুতল ভবণ নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। টিনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রেখে বাজারের খাস পুকুরের একটি অংশ দখল করে এ অবৈধ নির্মাণ কাজ করে চলছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের এক ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের জানান, রশিদ সরদার সরকারী দলের প্রভাব খাঁটিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। সরকারী খাস পুকুরের পাড়ে তারা টিনের ছোট্ট ঘর তুলে ব্যবসা বানিজ্য করতে বাধাঁর সম্মুখীণ হচ্ছেন। সেখানে তিনি বাজারের মধ্য স্থানে পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে কিভাবে তা তাদের বোধগম্য নয়। বাজারের অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, রশিদ সরদার লক্ষী বাজারের ইজারাদার। ভাসমান ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে বাজারের মধ্যে সরকারী ভাবে একটি টোল ঘর গড়ে তোলা হয়। ঐ টোল ঘরটিতে ভাসমান ব্যবসায়ীদের বসতে না দিয়ে গরুর খোয়াড় হিসেবে ব্যবহার করছে তিনি। বাজারের মধ্য স্থানে ইট বালু, শুরকী ও স্যানিটেসনের রিং ও মালামাল রেখে ব্যবসা করছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারনে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। টোল ঘরে ভাসমান ব্যবসায়ীরা বসতে না পেরে যেখানে সেখানে বসছে।এমন অব্যবস্থাপনার কারনে লক্ষীর বাজার থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজের কথা স্বীকার করে আব্দুর রশিদ সরদার বলেন, তিনি ভিটি ক্রয় করে বহু বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। অন্যরাও পুকুর পাড় দখল করে ঘর-দুয়ার নির্মাণ করে বসবাস করছে। তাতে কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই। শুধু আমার বেলায় বারবার অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিসে তিনি বন্ধোবস্তের জন্য আবেদন করেছেন। সার্ভেয়ার এসে মাপজোপ করে গেছেন। তিনি আরো বলেন, মহিপুর তহসিলদার মৌখিক ভাবে কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন তাকে।
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা জগৎবন্ধু মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, লক্ষী বাজারে সরকারী জমিতে বহুতল ভবন নির্মানের কথা জানতে পেরে তিনি মহিপুর তহসিলদারকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি বলেন।

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি