সরকারের পক্ষ থেকে রোববার থেকে সীমিত আকারে শপিংমলসহ সবধরনের দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি ছিল। তবে অনুমতি পেলেও করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে প্রায় ৯৫ শতাংশ দোকান ও শপিংমল খুলছেন না ব্যবসায়ীরা।

করোনাভাইরাস আরও বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় বসুন্ধরা শপিং মলের পক্ষে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ঈদের আগে তারা শপিং মল খুলছেন না। এরপর একই পথে হাঁটেন যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীরা। নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও দোকান না খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় শুক্রবার । একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে গাউছিয়া ও চাঁদনি চকের মতো জনপ্রিয় শপিং মল।

এরপর একে একে ,আনারকলি ও মৌচাক মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট, নিউ নুরজাহান মার্কেট, হাজী সিদ্দিক ম্যানসন রেজা মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় দোকান মালিক সমিতি।

শনিবার মিরপুর-১ নম্বর এলাকার মিরপুর মাজার কো-অপারেটিভ মার্কেট, শাহ আলী শপিং কমপ্লেক্স, মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট, মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্স, বাগদাদ শপিং কমপ্লেক্স, মিরপুর-২ নম্বরের মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স, মিরপুর-১০ নম্বরের শাহ আলী শপিং কমপ্লেক্স ঈদের আগ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিনি দুপুরে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার অ্যান্ড মেশিনারি মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এবং নবাবপুর দোকান মালিক সমিতির কর্মকর্তা ও পরিচালকরা নবাবপুরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থকে বড় করে দেখছি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য সারা দেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঝুঁকি এড়াতে অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, রাজধানীতে নিউ সুপার মার্কেট ছাড়া সব শপিংমলই বন্ধ থাকবে। এরইমধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীসহ প্রায় সব বিভাগেই শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যারা একেবারেই চলতে পারছেন না, সেসব দোকানদারের দোকান খোলা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর সংখ্যা খুব একটা বেশি হবে না।

গত ২৪ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এসময় হাসপাতাল, ফার্মেসি ও জরুরি সেবা বাদে অন্য সকল ধরণের প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। গার্মেন্টস মালিকদের দাবির মুখে ও দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে গার্মেন্টস খুলে দেয় সরকার। এসময় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির দিক বিবেচনা করে দোকান ও শপিং মল খুলে দেয়ার দাবি জানানো হয়।

গত ৪ মে সরকারের পক্ষ থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিং মল খোলা রাখার অনুমতি দেয় সরকার। অনুমতির পর মার্কেট খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হুশিয়ারির মুখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের আগে বাজার করার জন্য শপিংমল খুলে দিলে ভিড় বাড়বে। আর এই ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।