এখন পর্যন্ত সরকারের অনুমোদন না পেলেও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিজেদের উদ্ভাবিত ‘জিআর র‌্যাপিড ডট ব্লট’ কিট দিয়ে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু করবে । মঙ্গলবার থেকে দুটি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা শুরু হবে।যে কেউ এসে পরীক্ষা করাতে পারবে।

শনিবার (২৩ মে) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অনুমোদন তো আমাদের আছেই। তারা তো আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে। আমাদের হাসপাতালকেও অনুমোদন দিয়েছে। সেটার বলেই আমরা করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করছি।

তিনি জানান, রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল এবং সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনার পরীক্ষা শুরু হবে। সবাই সেখানে গিয়ে পরীক্ষা করাতে পারবেন।এই পরীক্ষার জন্য ৭০০ টাকা করে নেয়া হবে। এর মধ্যে অ্যান্টিজেনের জন্য ৪০০ আর অ্যান্টিবডির জন্য ৩০০ টাকা করে নেয়া হবে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কিটের সক্ষমতা যাচাইয়ের যে পরীক্ষা বিএসএমএমইউতে চলছে, তাতে আমার মনে হয় না তারা দু’চার দিনের মধ্যে ফলাফল দিতে পারবে। সেজন্য ঈদের পরে শুরু করছি আমাদের পরীক্ষাটা। আমরা আর অপেক্ষা করব না।

অনুমোদন ছাড়াই কিট দিয়ে টেস্ট সরকারের নীতিমালায় আছে কিনা জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের প্যাথলজির পরীক্ষা কী সরকার বাধা দিতে পারবে? অনুমোদন হয়নি, সেটা তারা কোর্টে গিয়ে করবে। আমাদের হাসপাতাল তো ড্রাগের (ওধুষ প্রশাসন অধিদফতরের) অধীনে না। তারা নথি দিলে সরকারকে উত্তর দেব। বিএসএমএমইউর অনুমোদন তো আমাদের আছেই। তিনি বলেন, যেকোনো নতুন কিট বা ওষুধকে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণস্বাস্থ্যের কিটের ক্লিনিক্যাল ট্র্যায়াল করছে বিএসএমএমইউ।

গণস্বাস্থ্যের করোনা শনাক্তের কিট সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বরুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কিছু কিট দিয়েছে আমাদের। কিটের কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য কমিটি করা হয়েছে। তারা পদ্ধতিগত বিষয়ে কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হলে আমাকে জানাবে। এর বাইরে এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলা সম্ভব না।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) অথবা আইসিডিডিআরবিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য অনুমতি দেয়া হয়। এরপর গত ২ মে কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহীনা তাবাসসুমকে প্রধান করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে এই কিট উদ্ভাবন করেছেন একদল বিজ্ঞানী। অন্য গবেষকরা হলেন– ড. ফিরোজ আহমেদ, ড. নিহাদ আদনান, ড. মো. রাইদ জমিরুদ্দিন ও ড. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার।