তোরণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মেয়র সমর্থিত কর্মীদের হাতে নিহত হন এমপি সমর্থিত যুবলীগ কর্মী তাপস দাস (২৯)। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় নিহতের বড় ভাই পংকজ দাস বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলকে। এ ছাড়া ৩৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মেয়র সমর্থিত সোহাগ (৩৫) ও কার্তিক (৩৫) নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দুই পক্ষই পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে। মেয়রের পক্ষ থেকে কমিশনার বাবুল খান আজ দুপুর ১২টায় পৌর ভবনে সংবাদ সমম্মেলন করা হয়। সেখানে মেয়ক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

অপর দিকে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব হাওলাদার দাবি করেন, যুবলীগ কর্মী তাপস দাস হত্যাসহ আরও ১৫ কর্মীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে মেয়রের নির্দেশেই।

লিখিত বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘জুয়েল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পড়ে উপজেলার যুব সমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে শান্ত বাউফলকে অশান্ত করে রেখেছেন।’ এ সময় তাপসের খুনের বিবরণ দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বড় ভাই।

উল্ল্যেখ, বাউফল থানা ও জেলা পরিষদ বাংলোর সামনে তোরণ নির্মানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রোববার দুপুরে সাবেক চিফ হুইপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের সমর্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আ স ম ফিরোজ সমর্থিত যুবলীগ কর্মী তাপস দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে মেয়র সমর্থিত কর্মীরা। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।

ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় তাপস ও ইমাম নামের আরেক যুবলীগ কর্মীকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তাপসের মৃত্যু হয়।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় তাপস হত্যা ঘটনায় পৌর মেয়র জুয়েলকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের নাম উল্লেখখ করে একটি এজাহার দাখিল করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’