করোনাভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে ৭৮ দিনের লকডাউন শেষে আগামী ৮ জুন থেকে খুলবে নিউইয়র্ক সিটি। গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়োকে এবং স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো এ কথা জানিয়েছেন।

স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রতিটি নাগরিক যদি যত্নবান হন তাহলে সবকিছু স্বাভাবিক হতে বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। নিজের, পরিবারের, প্রতিবেশী, সমাজ তথা গোটা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সকলকে। এটি আইন দিয়ে সম্ভব নয়, নিজেকে সচেতন হতে হবে। স্টেট গভর্নর এ সময় উল্লেখ বলেন, ‘নিউইয়র্ক সিটি অবরুদ্ধ করার ঘটনা এটাই প্রথম ছিল। আর তা করতে হয় আমাকে। এ জন্য আমিও কষ্টে দিনাতিপাত করছি। তবে সামগ্রিক কল্যাণে এর বিকল্প ছিল না।’

তিনি জানান, ৭ জুন পর্যন্ত সবকিছুর উন্নতি ঘটলেই শিথিলের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। স্টেট গভর্নর এ সময় বলেন, ‘সবকিছু করা হচ্ছে বাস্তবতার আলোকে। গত এপ্রিলে করোনা টেস্ট করার সময় প্রতি সপ্তাহে সংক্রমিত পাওয়া গেছে ৪০ হাজারের বেশি। অপরদিকে, গত সপ্তাহে তা নেমে ৫ হাজারে এসেছে। নিম্নগামীর এই ধারা অব্যাহত থাকলে আর কোনো সংশয় থাকবে না।’

লকডাউন পুরোপুরি উঠিয়ে নিতে ৪ ধাপে কাজ করছে নিউইয়র্ক। প্রথম ধাপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হবে, এতে অন্তত চার লাখ কর্মহীন লোক কাজে ফিরতে পারবেন। করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিউইয়র্ক। এখানে বেসরকারি খাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৮ লাখ ৮৫ হাজার লোক।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাতটি নির্দেশনা পূরণ সাপেক্ষ নিউইয়র্ক শহরে নির্মাণ শিল্প, উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অতি-জরুরি নয় এমন খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ক্রেতার সঙ্গে ব্যবধান রেখে লেনদেন করতে পারবে। প্রথম ধাপে নির্মাণ, পোশাক এবং ইলেকট্রনিক্সের আইটেম উৎপাদনকারী এবং স্টোর ও কারখানার জন্য পাইকারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করার অনুমতি দেওয়া হবে। ওয়ার্কসাইটগুলো তাদের ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশেরও কম জায়গায় পরিচালনা করতে হবে। নিয়োগকর্তাদের অবশ্যই সব কর্মীকে বিনামূল্যে মাস্ক এবং পিপিই সরবরাহ করতে হবে।

ইতিমধ্যেই নিউইয়র্ক সিটিতে ৮০ লাখ মাস্ক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং শিগগিরই আরও ১০ লাখ বিতরণ করা হবে বলে জানান সিটি মেয়র।

উল্লেখ্য, মাস্ক ছাড়া কাউকেই নিউইয়র্ক অঞ্চলের দোকানপাট এবং কল-কারখানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দোকানের কর্মচারীরাও মাস্ক পরবেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করবেন। গত বৃহস্পতিবার এক নির্বাহী আদেশে নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সির গভর্নর এই বিধি জারি করেছেন।