দেশে ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায়, এর সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন পদ্ধতিতে এলাকাভিত্তিক লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ দুই এলাকা রাজাবাজার ও ওয়ারীকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করে পরীক্ষামূলকভাবে শনিবার (৬ জুন) সন্ধ্যা থেকেই লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে রাজধানীর রাজাবাজার ও ওয়ারী এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায়, এই দুই এলাকাকে রেডজোন চিহ্নিত করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, সরকার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এখন নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহর এবং জেলা, যেগুলোতে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলোকে চিহ্নিত করেছে। ব্যাকপভাবে সংক্রমিত এলাকগুলোকে ‌’রেড জোন’ এর আওতায় এনে পুরোপুরি লকডাউন করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এরই অংশ হিসেবে ঢাকার যেসব রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে দু’টিকে আজকেই পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের লকডাউনে সর্বোচ্চ কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। লকডাউন করা ‘রেড জোন’ এর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত কাউকেই ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হবে না। বাকী এলাকাগুলো সোমবার লকডাউন করা হবে।

স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছে , সারাদেশে যেসব এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে দ্রুততম সময়ের মধ্য লকডাউন করা হবে। রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত লকডাউন এলাকার কেউ কোনভাবেই ঘর থেকে বের হতে পারবেন না।

এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে রাজধানীসহ সারাদেশকে তিনটি জোন- রেড, ইয়েলো ও গ্রিন ভাগে ভাগ করে কর্মপন্থা গ্রহণের উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু করলো সরকার।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেশি আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়েলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা মুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়েলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই টানা ৬৬ দিনের ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন নির্দেশনা মানার সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্ধ থাকা গণপরিবহনও (বাস, লঞ্চ, ট্রেন) চালু হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি নেই।

দেশে নতুন করে আরও ২ হাজার ৬৩৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারা গেছেন ৩৫ জন। করোনাভাইরাস নিয়ে নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে শনিবার (৬ জুন) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।