পাবনায় দিনদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রথম অবস্থায় অল্প সংখ্যক হলেও লকডাউন শিথিল হওয়ার পর গণপরিবহণ আর মার্কেটগুলো খুলে দেওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আজ রোববার পাবনা ইসলামী ব্যাংক লক ডাউন ঘোষনা করা হয়েছে।
গেল ২৪ ঘন্টায় এ জেলায় নতুন করে ৫৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ১২৯ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। তন্মধ্যে ৮ জন রোগী সুস্থ হয়েছে। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে ইতোমধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাবনা ইসলামী ব্যাংকের শাখায় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ লাইনের ব্যারাক ও সদর উপজেলার কয়েকটি করোনা সনাক্ত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ঢাকাতে ১৭৮ ও রাজশাহী ল্যাবে ১৪৮ জনের মিলে মোট ৩২৬ টি নমুনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে রাজশাহী ল্যাব থেকে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৩১ জনের আর ঢাকা থেকে রিপোর্ট এসেছে ২৬ জনের।
পাবনায় আক্রান্তের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক পাবনা শাখার চার কর্মকর্তার করোনা পজিটিভ এসেছে। জেলা পুলিশের ২ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও ৯ জন কনস্টেবলের করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়াও ঈশ্বরদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম শামীম করোনা উপসর্গ নিয়ে করোনা কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে নিবির পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাকে। প্রয়োজনে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে তাকে ঢাকাতে স্থানান্তর করা হবে বলে জানান পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. একেএম আবু জাফার।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এফ এ আসমা খান জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে ডা. শফিকুল ইসলাম শামীম হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এর আগে গেল শুক্রবার করোনা উপসর্গ নিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন তার মা আলো বেগম (৬৫)। এদিকে ডা, শামীম জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথাসহ করোনা উপসর্গে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শনিবার পাবনা করোনা ডেডিকেটট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। এখনও রিপোর্ট হাতে আসেনি।
পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী সোচ্চার রয়েছে। পাবনায় প্রত্যেকটি মানুষকে মাস্ক ব্যবহার শতভাগ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিনামুল্যে প্রথম দফায় ১ হাজার মাস্ক দরিদ্র, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূলদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এই বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, তারপরও যদি কেউ মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হন, তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, সাধারণ মানুষ নানা অযুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। আর লকড ডাউন শিথিল করা, মার্কেট-দোকানপার্ট খুলে দেয়া এবং গণপরিবহণ চালু করার ফলে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুব দ্রুত সরকারি ভাবে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী তাদের।