করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সুদূর নিউইয়র্ক থেকে ঢাকায় উড়ে আসা মেধাবী ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খন্দকার মোশতাকের ভাগ্নে এবং আরেক খুনি আব্দুর রশিদের খালাতো ভাই” এমন গুজব ছড়ানোর মূল হোতা প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। ভদ্রলোক কীভাবে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান পিআইবি’র ডিজি হয়েছে এবং অতি সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক বাগিয়ে নিয়েছে, চলুন জানা যাক অন্ধকার জগতের নেক্কারজনক কিছু সত্য।

বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব কাছের বান্ধবী বেবী মওদুদকে নিয়ে বিদ্রুপাত্মক কবিতা লেখায় গণভবনে দীর্ঘদিন কালো তালিকাভুক্ত ছিলো কথিত ইতিহাসবেত্তা কাম সাংবাদিক গুরু জাফর ওয়াজেদ। বেবী মওদুদ যতদিন জীবিত ছিলেন সরকারের কাছে ঘেঁষতে পারেনি এই আজন্ম চাটুকার। বেবী মওদুদ মারা যাওয়ার পরই ঘুরতে থাকে জাফর ওয়াজেদের ভাগ্যের চাকা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সুপরিচিত দুই আমলার বদান্যতায় দখলে নেয় পিআইবি’র শীর্ষ পদ। আমলাদের একজন অবসরে, অন্যজন লিখেন ভালো কবিতা।

জাফর ওয়াজেদ সাংবাদিকতা করে জীবনে তেমন কিছু করতে না পারায় বন্ধুকে পুনর্বাসন করতেই মূলত প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)’র মহাপরিচালক পদে তাকে বসিয়ে দেন ঐ দুই প্রভাবশালী আমলা। চলতি বছরের গোড়ার দিকে একুশে পদকও একই বন্ধুদেরই দয়ার দান। সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন কিংবা সাংবাদিকদের কল্যাণে বিগত দিনে ন্যূনতম কোন অবদান ছাড়াই জাফর ওয়াজেদকে একুশে পদক পাইয়ে দেয়ায় সাংবাদিকতার মহান পেশাকে চপেটাঘাত করা হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকার অধিকাংশ সিনিয়র সাংবাদিক ও সম্পাদকেরা।

গুজব সম্রাট জাফর ওয়াজেদের অতীত ইতিহাস নাড়া দিতে গিয়ে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে। বিএনপি আমলে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর মালিকানাধীন টেলিভিশন সিএসবিতে কাজ করতো জাফর ওয়াজেদ। তখন যুদ্ধাপরাধী সাকার চামচামি করাই ছিলো তার ধ্যান জ্ঞান সাধনা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সবচেয়ে ত্যাগী নেতা বনে যায় জাফর ওয়াজেদ। কথায় কথায় যাকে তাকে রাজাকার বানিয়ে দেয়ার দুর্দান্ত মেধা তার। সাংবাদিকতায় উল্লেখ করার মতো কোন অর্জন না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তেল মেরে রাষ্ট্রীয় পদ ও পুরষ্কার বাগিয়ে নেয়াই জাফর ওয়াজেদের আজীবনের একমাত্র সাফল্য।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)’র কাজ যেখানে দেশে ভাল সাংবাদিক তৈরি করা সেখানে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তা যদি গুজব ছড়ানোর ইজারা নেয় তাহলে দেশে সাংবাদিকতার বা সাংবাদিকদের ভবিষ্যত কি? অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, পিআইবিতে তার দক্ষিণ হস্ত নাকি পারভিন সুলতানা রাব্বি নামের বিএনপি’র এক ভদ্রমহিলা। মির্জা আব্বাসের মনোনয়ন ফরম তুলতে যাওয়া এই মহিলাকে ঢাকার অনেকেই চেনেন, সচিত্র তথ্য প্রমাণও আছে। ভালো সাংবাদিক তৈরির পরিবর্তে পিআইবিকে আজ মদপান আর আড্ডাখানায় পরিনত করেছে সুযোগসন্ধানী জাফর ওয়াজেদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

মাঈনুল ইসলাম নাসিম