নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সরকারি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হিমাংশু রায়ের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯০ মেট্রিক টন সরকারি চাল ও ১৩ হাজার ৯৬৫টি ৫০কেজির বস্তা সহ প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় খাদ্য গুদামটির অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসিএলএসডি)হিমাংশু রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ও প্রথমে ডিমলা থানায় একটি সাধারন ডায়রি ও পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন অভি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,২০১৯ সালের ১৪ জুনে ডিমলা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন হিমাংশু। যোগদানের পরপরই তার বিরুদ্ধে নানান অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।গত ২৪ মার্চ এসব অনিয়ম তদন্তে জেলা খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক(অঃদাঃ) মাহমুদ হাসানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।গত সোমবার(৮জুন)সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে সেই কমিটি।তদন্তে অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্থ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিমাংশুর বিরুদ্ধে গুদামের সরকারি ১৮৯ দশমিক ২৭০ মেট্রিক টন চাল এবং ১৩ হাজার ৯৬৫টি খালি বস্তা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়।যার বাজার মূল্য ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯শত ৭৮ টাকা(প্রায় কোটি টাকা)।সেদিনেই গুদাম সীলগালা করে দেয়া হয়।এর আগেও তিনি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি খাদ্যগুদামে কর্মরত থাকাবস্থায় সেখানেও নানা অনিয়ম খাদ্যশষ্য আত্মসাতের সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে গত সোমবার খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটি পুনরায় ডিমলা সরকারি খাদ্যগুদামে গেলে ওই অভিযুক্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা পালিয়ে যাওয়ায় প্রথমে সাধারন ডায়রি (জিডি)নং-৩২০, তারিখ ৮/৬/২০২০ ও পরে তার বিরুদ্ধে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জগদীশ চন্দ্র সরকার(অঃদাঃ) বাদী হয়ে মঙ্গলবার(৯জুন) মামলা নং-৮,তারিখ ৯/৬/২০২০ইং দায়ের করে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডিমলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হিমাংশু কুমার রায়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার(৯জুন) ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯শত ৭৮ টাকা মূল্যের সরকারি চাল ও খালি বস্তা আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জগদীশ চন্দ্র সরকার একটি মামলা করেন।আমরা মামলা রুজু করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্য্যালয় রংপুরে পত্র প্রেরন করেছি।

এদিকে স্থানীয়দের দাবি অভিযুক্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা হিমাংশু রায়কে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তদন্ত পুর্বক উক্ত গুদামের আরও কোনো অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে কি-না তা সহ যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খাদ্য গুদামে অসৎ উপায়ে ব্যবসা করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আসছেন তাদেরও শনাক্ত করে দৃস্টান্তমুলক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হলে তবেই সরকারি খাদ্য গুদামে অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলনামুলক ভাবে কমবে।

মহিনুল ইসলাম সুজন,ক্রাইম রিপোর্টার নীলফামারী॥