বেশ কয়েকদিন ধরেই লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে ভারতীয় ও চীনা সেনাদের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চলছে। আর এই উত্তেজনার মধ্যেই বেইজিং জানিয়েছে, গালওয়ান চীনের অধীনেই আছে। আজ শনিবার ভারতের নয়াদিল্লীতে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজানের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, গালওয়ান সীমান্তে আগে থেকেই চীনা সেনারা টহল দেয়। গত এপ্রিলে ভারতীয় সেনারা গালওয়ানে অবস্থিত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর রাস্তা সেতু ও অবকাঠামো নির্মাণ করলে চীন সেখানে বাধা দেয়। এরপর ভারতীয় সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে উসকানি দিলে চীনা সেনা তার জবাব দিতে বাধ্য হয়।

৬ মে রাতে ভারতীয় সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চীনা এলাকায় ঢুকে ব্যারিকেড ও বেড়া তৈরি করে ঘাঁটি গেড়ে বসে। তার ফলে ওই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ নিতে বাধ্য হয় চীনা সেনা।

বিবৃতিতে জানানো হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েক দফায় ভারত ও চীনের সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে যোগাযোগ করা হলে ভারত চীনা এলাকায় তৈরি করা অবকাঠামো ও সেনা প্রত্যাহার করে নেয়।

তারপর ৬ জুন দুদেশের সেনা কর্মকর্তা পর্যায়ে বৈঠক করে উত্তেজনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, টহল দেওয়ার সময় ভারতীয় সেনারা গালওয়ান নদীর মোহনা পেরোবে না। সেইসঙ্গে সেখানে ভারতীয় সেনারা কোনো ব্যারিকেড বা বেড়াও তৈরি করবে না। আলোচনার মাধ্যমে দফায় দফায় সেনা প্রত্যাহার করা হবে।

চীন দাবি করছে, ১৫ জুন বিকেলে আবার ‘উসকানি দিতে’ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোয় ভারতীয় সেনা। এ সময় চীনা সেনার একটি দল তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে গেল তাদের ওপর হামলা চালায় ভারতীয় সেনারা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই দুই সেনাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই শুরু হয়।

চীন বলছে, ভারতের এমন উসকানিমূলক আচরণের কারণেই দুই দেশের মাঝে সম্পর্কের অবনতি হয়। চীন ভারতের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

চীন দাবি করছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনালাপের সময়ও চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই স্পষ্টভাবে এসব বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন। সেইসঙ্গে ভারতীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অনুরোধ করা হয় চীনের পক্ষ থেকে।