প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ত্যাগ ও সহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগের বড় অর্জন। আওয়ামী লীগের ত্যাগ ও সহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে যে অর্জনটি এসেছিল তা হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা … আজ আমরা আমাদের নিজের একটি দেশ পেয়েছি, জাতি হিসেবে আমরা আমাদের মর্যাদা পেয়েছি … এটিই সবচেয়ে বড় অর্জন।’

মঙ্গলবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ৮ম অধিবেশন শুরুর পরই প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপনা করা হয়। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি সংসদে বলেন, ‘এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানবতা ও মানুষের সেবা করে আসছে … এটি সর্বদা বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলে, সর্বদা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে।’ তবে তিনি আফসোস করে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন জাতিকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তখন মোস্তাক-জিয়াউর রহমান চক্র তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ফলে, দেশের সামনের দিকে অগ্রযাত্রা বন্ধ হয়ে যায়।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘একবার ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। তবে এটি সম্ভব হয়নি।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘সত্য মুছে ফেলা যায় না … জাতির পিতা শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে নেই, তবে তার অস্তিত্ব বাঙালির হৃদয়ে রয়ে গেছে … আমাদের তার ইচ্ছা পূরণ করতে হবে, আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়বো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি এবং শামসুল হক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তখনকার তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম-সম্পাদক, যদিও তিনি তখন জেলে ছিলেন। জেলে থাকা অবস্থায় তাকে যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তে সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেই স্বাধীনতার সূর্যকে উদিত করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। পলাশীর প্রান্তরে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেই সূর্য উদিত হয় ১৯৭১ সালে।’

বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জীবন দেওয়া নেতাকর্মীদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী যারা জীবন দিয়েছে, আজ আমি তাদের কথা স্মরণ করি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমরা জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব। আজকের দিনে জাতির পিতার কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জন্য কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষ কিছু পেয়েছে। করোনাভাইরাসে দুঃখ-কষ্ট মানুষের আছে। আজও আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের ছাত্রলীগ, কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে আছে। করোনাভাইরাস সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।’

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষ উদযাপন কর্মসূচি সীমিত করার মতো আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনও সীমিত আকারে অনলাইনে করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।