করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৯২৬ জনের মৃত্যু হলো। এ ছাড়া দেশে নতুন করে আরো চার হাজার ১৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন আরো চার হাজার ৩৩৪ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৬৬ হাজার ৪৪২ জন।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) বেলা আড়াইটায় করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি নতুন একটিসহ মোট ৭০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৯৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ১৮ হাজার ৩৬২টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো আট লাখ দুই হাজার ৬৫৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও চার হাজার ১৯ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৯২৬ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও চার হাজার ৩৩২ জন। এতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৬ হাজার ৪৪০ জনে।

বুধবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগীদের মধ্যে আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৭ হাজার ৮৭৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৭৭৫ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও শনাক্তে হয়েছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড ছিল চার হাজার ১৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় গত ২৯ জুনের বুলেটিনে। আর দেশে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ৩০ ‍জুনের বুলেটিনে।

প্রতিবারের মতো করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সবাইকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট দিকনির্দেশনা বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বেড়েই চলেছে মৃত্যু।

এদিকে, করোনার পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা পর্যন্ত বৈশ্বিক এ মহামারিতে সারা বিশ্বে ১ কোটি ৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬০ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৮ জন সেরে উঠলেও প্রাণ গেছে ৫ লাখ ১৯ হাজার ২৭২ জনের। বাকী ৪২ লাখ ৬০ হাজার ১৫২ জন মৃদু বা মারাত্মক উপসর্গ নিয়ে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যায় সবার ওপরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ পর্যন্ত ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৯৫৩ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত করেছে দেশটি। এ শনাক্তের জন্য তারা ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৫৫ হাজার টেস্ট করে। শনাক্তের দিক থেকে দ্বিতীয়তে আছে ব্রাজিল। দেশটির ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৯ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। তিন নম্বরে রয়েছে রাশিয়া যাদের শনাক্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৬১ হাজার ১৬৫।

সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে যেসব দেশে:

যুক্তরাষ্ট্র: ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৮ জন।

ব্রাজিল: ৬০ হাজার ৭১৩ জন।

যুক্তরাজ্য: ৪৩ হাজার ৯০৬ জন।

ইতালি: ৩৪ হাজার ৭৮৮ জন।

ফ্রান্স: ২৯ হাজার ৮৬১ জন।

মেক্সিকো: ২৮ হাজার ৫১০ জন।

স্পেন: ২৮ হাজার ৩৬৩ জন।

ভারত: ১৭ হাজার ৮৫৫ জন।

ইরান: ১০ হাজার ৯৫৮ জন।

বেলজিয়াম: ৯ হাজার ৭৬১ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।