রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআর) তরিকুল ইসলাম শিবলীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নাখালপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আশিক বিল্লাহ দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া এ ঘটনার মূল আসামি রিজেন্টের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে ধরতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে।’

মঙ্গলবার রাতে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনিয়মের ও প্রতারণার অভিযোগ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায়। রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদসহ এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- সাহেদের এপিএস পলাশ (২৮), মাসুদ পারভেজ (৪০), আব্দুর রশিদ খান জুয়েল (২৯), শিমুল পারভেজ (২৫), দীপায়ন বসু (৩২), মাহবুব (৩৩) ও সৈকত (৩৯)।

দণ্ডবিধির ৪০৬/ ৪১৭/৪৬৫/৪৬৮/৪৭১ ও ২৬৯ ধারায় এ মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রায় ছয় হাজার ব্যক্তির করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার নামে দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আয় করলেও বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা বলে এক কোটি ৯৬ লাখ টাকার একটি বিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দিয়েছে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ নিজেকে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি বলে দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে সে একজন ধুরন্ধর, অর্থলিপ্সু ও পাষণ্ড। করোন রোগীদের টেস্ট রিপোর্ট নিয়ে প্রতারণা, বিশ্বাস ভঙ্গ জাল-জালিয়াতি, ভুয়া রিপোর্ট তৈরি, ভূয়া রিপোর্টকে খাঁটি বলে চালিয়ে দেওয়া এবং কোভিড-১৯ রোগ সংক্রমণের বিস্তারে ভূমিকা রাখার অপরাধ করেছে আসামিরা।

এ মামলায় যে সব ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার সর্বোচ্চ শাস্তির ধারা হচ্ছে দণ্ডবিধির ৪৬৮। প্রতারণা করার উদ্দেশে জালিয়াতির এ ধারায় সর্বোচ্চ সাত বছর সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং সেই সঙ্গে জরিমানাও হতে পারে। এ ধারায় শুধু অর্থদণ্ডের কথা উল্লেখ নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শারীরিক সাজা খাটতেই হবে।

এদিকে র‌্যাবের অভিযানে আটক আহসান হাবীব (৪৫), আহসান হাবীব হাসান (৩৯), হাদিম আলী (২৫), কামরুল ইসলাম (১৭), রাকিবুল ইসলাম সুমন (৩৯), অমিত বনিক (৩৩), আব্দুস সালাম (২৫) ও আব্দুর রদি খান জুয়েলকেও (২৮) আসামি দেখানো হয়েছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, সাহেদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হচ্ছে। তিনি তিনি যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সে বিষয়েও নজর রাখা হচ্ছে। সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘খুব দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’