বিতর্কিত কর্মকান্ডে প্রশাসনকে বিব্রত করা, ব্যাপক, দূর্নীতি,অনিয়ম এর অভিযোগে বান্দরবানের বহুল আলোচিত লামার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর এ জান্নাত রুমি’কে অবশেষে বদলি করা হলো। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে রংপুর এর বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলি করা হয়। আজ রবিবার (১২ জুলাই) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব শেখ রাসেল হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই তথ্য জানা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৭ জুলাই) জেলার বহুল আলোচিত এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজের তালাক দেওয়া স্বামীর বিরুদ্ধে লামা থানায় জিডি দায়ের করে টক অফ দ্যা টাউনে পরিণত হন এই ইউএনও।

সাংসারিক মনোমালিন্য এবং কর্মস্থলে অন্যায়ভাবে প্ররোচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভনপূর্বক হুমকি ধামকি প্রদর্শন করায় এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে গত ২৪ জুন রাতে আমার স্বামী টি এ এম ওমর ফারুককে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মৌখিকভাবে তালাক দেন বলে গত ৭ জুলাই লামা থানায় জিডি করেন।

জিডিতে আরো বলা হয়, এতে সে ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যা করবে অথবা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। পরে ৬ জুলাই আমি তাকে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড এডি সহকারে তালাকনামা প্রদান করি। তালাকনামা পেয়ে ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সে আমার লামা উপজেলা সরকারি বাসভবনে এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে আসে এসময় আমার চিৎকার শুনে ঘরের কাজের বুয়া সেখানে উপস্থিত হলে কোনো রকম প্রাণে বেঁচে আমার সন্তানকে নিয়ে অন্যরুমে চলে যাই।

জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, পরে সে সময় সুযোগ বুঝে আমাকে মেরে পঙ্গু করবে নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যায়। সে আমার সন্তান রাহিবকে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লুকিয়ে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করবে বলেও হুমকি দেয়। তাই এ অবস্থায় আমার সন্তানকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যোগদান করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।
সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বাসিন্দা রুমী চক্রবর্তী লামা উপজেলার ইউএনও ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে কক্সবাজার পৌরসভার বাসিন্দা টি এ এম ওমর ফারুক রুবেলকে বিয়ে করেন।
অন্যদিকে ইউএনও রুমির স্বামী বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী রেজিষ্টার টি এ এম ওমর ফারুক রুবেল গত ৯ জুলাই স্ত্রী রুমি লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মাহমুদুল হক এর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং এই কারনে সংসারে ভাঙ্গন ধরেছে বলে উল্লেখ করে লামা থানায় একটি জিডি করেন।

অন্যদিকে আরো জানা যায়, আলোচিত এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার সরকারী গাড়ী ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং জেলার লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক ডাক্তারের এর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। তিনি ফাইতং এলাকার প্রতিটি ইটভাটা থেকে অবৈধ ভাবে অর্থ নিয়ে ভাটা পরিচালনার অঘোষিত অনুমতি দিতেন। সাধারণ মানুষকে হয়রানি, দূর্নীতি এবং বান্দরবান শহরের ডিসি অফিস সংলগ্ন একটি জুয়েলার্স থেকে প্রতিমাসে ভরি ভরি স্বর্ণ কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে অনেকের মনে প্রশ্ন, জেলার এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এতো অর্থের উৎস কোথায় ? আর তা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করলে এই ইউএনও কে যে বদলি করা হয় অনেকে মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

স্বপন কর্মকার লামা বান্দরবান প্রতিনিধি