গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণের ৩দিন পর রবিবার রাতে এক পোশাক কর্মীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। এসময় দু’অপহরণকারীকে নেশা জাতীয় দ্রব্যসহ আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলো- বি. বাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার কাদুর এলাকার মৃত শহিদ মিয়ার ছেলে আমান উল্লাহ (৪৮) ও গাইবান্ধা জেলার শাঘাটা থানার হাসিয়ালকান্দি এলাকার মৃত দুলু মিয়ার ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩০)। এদেরমধ্যে আমান উল্লাহ গাজীপুর সদর থানার দেশিপাড়া এলাকার মনিরের বাসার এবং জহিরুল ইসলাম জয়দেবপুর থানার নয়নপুর এলাকার মিলনের বাসার ভাড়াটিয়া।

র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সদর থানার গজারিয়াপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানায় চাকুরি করেন মোঃ আমিনুল ইসলাম (৩৫)। তিনি বগুড়া জেলার গাবতলী থানার ডিহিডওর এলাকার মোঃ তোবু সরকারের ছেলে। তিনি গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত বৃহষ্পতিবার (১৬ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ন্যাশনাল পার্কের সামনে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় ক’অপহরণকারী সেখানে গিয়ে কৌশলে তাকে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করায়। পরে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আটক করে শারীরিক নির্যাতন করে এবং তার কাছে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরদিন অপহৃতকে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে আমিনুলের পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, অপহৃতের সন্ধান না পেয়ে তাকে উদ্ধারের জন্য আমিনুলের স্বজনরা গাজীপুরে র‌্যাব-১’র পোড়াবাড়ী ক্যাম্পে আবেদন করেন। এরপ্রেক্ষিতে র‌্যাব সদস্যরা বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়। অপহরণের তিনদিন পর রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অপহরণকারীরা মুক্তিপণের টাকা নেওয়ার জন্য গাজীপুরের সদর থানার সালনা বাজার এলাকায় অবস্থান করছে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে ওই ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডারের নেতৃত্বে র‌্যাব-১’র সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী আমান উল্লাহ ও জহিরুল ইসলামকে আটক করে। এসময় র‌্যা’র উপস্থিতি টের পেয়ে আটককৃতদের অন্য সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত আমিনুলকে সালনা ব্রীজের উত্তর পাশে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে অজ্ঞান কাজে ব্যবহৃত দু’পুরিয়া ঔষধ এবং অপহৃতেরসহ ৪টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আটককৃতরা র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া থেকে গার্মেন্টসে চাকুরির আড়ালে বিভিন্ন লোককে কৌশলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে অপহরণ মুক্তিপন আদায় করে আসছিল।