২০১৩-১৪ অর্থ বছরে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ হয়েছিল। ২০১৭ সালের স্মরণীয় ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে সাঁকোটি ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। নদীর দুই পাড়ের ৯ গ্রামবাসীকে জরুরী কাজে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার। সময় বাঁচাতে গ্রামবাসীরা খরার সময় হাটুপানি নদী ডিঙিয়ে এবং নদীতে পানি থাকলে নৌকায় পারাপার করেন। এতে অর্থ ও সময় দুই’ই নষ্ট হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে ওই ৯ গ্রামবাসীকে।

এ ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে পাঠকপাড়া ও কুয়ারপুর সংযোগ মুচিরঘাটে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের চেহারা শুধু ভোটের সময় দেখা গেছিল। তারপর থেকে আর কোন খোঁজখবর নেই তার। সরেজমিনে শিবনগর ইউনিয়নের মুচিরঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, বয়ে যাওয়া ছোট যমুনা নদী একপ্রান্তে পাঠকপাড়া ও অপরপ্রান্তে কুয়ারপুর। সেখানে একটি বাঁশের সাঁকো থাকলেও ২০১৭ সালের স্মরণীয় বন্যার পর আর দেখা মিলেনি সাঁকোটির। সাঁকোটি না থাকায় নদীর পশ্চিমপ্রান্তের পাঠকপাড়া, শমশেরনগর, চোকারহাট, মল্লাই ও মদনপুরের জনসাধারণকে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পূর্বপ্রান্তের শিবনগর পরিষদসহ বাজারে যেতে দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার। একইভাবে নদীর পূর্বপ্রান্তের কুয়ারপুর, মহেশপুর শিবনগর ও পলিশিবনগর গ্রামবাসীকে পশ্চিমপ্রান্তে জরুরী প্রয়োজনে যেতে হলে ঘুরতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার পথ। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ সময় বাঁচাতে খরার সময় হাটুপানি নদী পার হন আবার নদীতে পানি থাকলে নৌকার মাধ্যমে পার হন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন উর রশিদ পাঠকপাড়া ও কুয়ারপুর সংযোগ এলাকার মুচিরঘাটে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের স্মরণীয় ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যায় সাঁকোটি। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ চৌধুরী বিপ্লবের চেহারা শুধু ভোটের সময় দেখা গেছিল। তারপর থেকে আর কোন খোঁজখবর নেই তার। একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেও কোন লাভ হয়নি। সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণ করলে ৯ গ্রামবাসীর কষ্ট লাঘব হবে।
সাবেক ইউপি চেয়াম্যান মো. হারুন উর রশিদ বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যায়।
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশিদ চৌধুরী বিপ্লব বলেন, নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব না থাকলে এতোদিনে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হতো। আশা করা যাচ্ছে অক্টোবরে নির্মাণ করা শুরু করা যাবে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহিদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ আফরোজের অফিসিয়াল (ইউএনও’র) মুঠোফোনে একাধিকাবার ফোনকল করা হলে, তিনি ফোনকলটি গ্রহণ করেন’নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আফরোজ জাহান সেতু, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি