কলাপাড়া শহর থেকে পর্যটননগরী কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়ক হিসাবে পরিচিত ধুলাসার ইউনিয়নের বাবলাতলা বাজার হয়ে মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুর যাতায়তের সড়কের উপর স্লুইজগেটগুলো বেহাল অবস্থায় রয়েছে। কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়কের কয়েকটি সুইজ গেটের সংষ্কার কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে তাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মহামারি দূর্যোগ করোনাভাইরাস ও বর্ষা মৌসুমের কারনে দীর্ঘদিন ধরে সংষ্কার কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী, জরুরী রোগী, কলেজ ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছে এলাকাবাসীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাপাড়া শহর থেকে পর্যটননগরী কুয়াকাটা যাওয়ার বিকল্প সড়কের ধুলাসার ইউনিয়নের বাবলাতলাবাজার থেকে মৎস্যবন্দর মহিপুর-আলীপুর যাতায়তের প্রধান সড়কের বেড়িবাধঁ হিসাবে কয়েকটি ইউনিয়নকে রক্ষা করে। এসব ইউনিয়নে চাষাবাদের সুবিধার্থে জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়ার জন্য সড়কটির উপরে কয়েকটি স্লুইজগেটরয়েছে। এগুলোর মধ্যে গোমলাখলা স্লুইজগেট , মাইক ভাঙ্গা স্লুইজগেট , লক্ষি বাজার স্লুইজগেট, চাপলি বাজার স্লুইজগেট, নয়া মিস্রিপাড়া স্লুইজগেট, তুলাতলী বড়োহরপাড়া স্লুইজগেটগুলোর সংষ্কার কাজ শুরু করা হয়। গত বছরের শেষ দিকে ওয়াল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চায়না সিআইসিও (সিকো) কোম্পানি এসকল স্লুইজগেটগুলোর সংষ্কার কাজ শুরু করেন। মহামারি করোনাভাইরাস ও বর্ষা মৌসুমের কারনে দীর্ঘদিন ধরে সংষ্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে সড়কের প্রত্যেকটি স্লুইজগেটের স্থানে অবস্থা অত্যান্ত খারাপ হয়েছে। যাতায়তের জন্য বিকল্প ব্যাবস্থা না থাকায় স্লুইজগেটগুলোর উপরিভাগে বেহাল অবস্থায় পরিনত হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে হাটু সমান কাঁদা পেরিয়ে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসী ও পর্যটকদের। শুকনা মৌসুমে ছোট গাড়িগুলো অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে পারলেও হালকা বর্ষা মৌসুমে সে সুযোগটুকুও আর থাকে না। ফলে মিনি মৎস্য বন্দর খ্যাত বাবলাতলা বাজার থেকে মৎস্য বন্দর মহিপুরÑআলীপুরে মাছ সরবরাহ করতে চড়ম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এছাড়াও খানাবাদ কলেজ, মিস্রিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মিস্রিপাড়া ফাতেমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়তের অন্তরায় হচ্ছে এ সড়কটি। এ সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য মি¯্রপিাড়া বৌদ্ধমন্দিরসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যগুলো দেখা থেকে বঞ্চিত হয় পর্যটকরা। রাস্তার এই বেহাল অবস্থার কারনে সঠিক সময়ে প্রশাসনের লোকজন পৌছাতে সমস্যা হওয়ায় প্রতিনিয়ত এসকল এলাকায় অবৈধ অপকর্ম বৃদ্ধি পাচ্ছে। জরুরী রোগী নিয়ে কষ্ট পোহাতে হয় এলাকাবাসীর। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অতি দ্রুত সু-দৃষ্টি দিলে এসকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

লতাচাপলি ইউনিয়নের স্থানীয় করিম শরীফ বলেন, বাড়ি থেকে মহিপুর থানা সদরের প্রধান বাজারে যেতে অনেক জায়গায় ভাঙ্গা ও প্রচন্ড কাঁদা পেরুতে হয়। যাতায়ত পথে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাই রাস্তাটি অতি দ্রুত সংস্কার করলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হবে।

লতাচাপলি ইউপি চেয়ারম্যান মো: আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় বর্ষার পানিতে রাস্তাটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মৎস্য ব্যবসায়ীদের মাছ পরিবহন, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, পর্যটক ও জরুরী রোগী যাতায়তে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাটিতে প্রতিনিয়ত ছোট-খাট দুর্ঘটনার সংবাদ শোনা যায়। তাই অতিদ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি অত্যন্ত দূ:খ করে বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সীমিত বাজেট হতে তাৎক্ষণিক এতোগুলো ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামত করা সম্ভব নয়। তাই অতি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রকৌশলী মো: ওয়ালীউল্লাহ বলেন, বর্ষা মৌসুমে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না হলেও শুকনা মৌসুমে চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)