মহিপুর মৎস্যবন্দরে প্রকাশ্যে চলছে ’মিনি ক্যাসিনো’। প্রতিদিনই গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ মিনি ক্যাসিনো। মৎস্যবন্দরের আড়ৎপট্রি’র পশ্চিম দিকে পুরাতন ফরেষ্ট অফিস এলাকায় তাবু টনিয়ে মৎস্য শ্রমিক ও জেলেদের টার্গেট করে চলছে এ ক্যাসিনো, যা স্থানীয় ভাষায় বলা হচ্ছে লটারী’র জুয়া। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন সচেতন নাগরিক আপলোড করে এটি বন্ধে ষ্ট্যাটাস দেয়ার পর এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য ভিডিওটি তাঁদের দৃষ্টি গোচর হয়নি। এখনই খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহিপুর থানা থেকে ৪শ’ ফুট দূরত্বে মৎস্যবন্দরের শিববাড়িয়া নদীর তীরে (থানার সামনের চা দোকানী আম্বিয়া’র পুত্র) রিপন (২৮) নামের এক যুবক পার্শ্ববর্তী তালতলি উপজেলার ক’জুয়াড়ীকে নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে এ মিনি ক্যাসিনো বা লটারী জুয়া চালিয়ে আসছে। মিনি ক্যাসিনো’র এক একটি লটারী বিক্রী হচ্ছে ৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। যাতে পাওয়া যাচ্ছে আকর্ষনীয় প্লাষ্টিক ও কাঁচের বিভিন্ন সামগ্রীসহ মোবাইল পর্যন্ত। কালে ভদ্রে দু’চার জনকে বিভিন্ন সামগ্রী পেতে দেখা গেলেও মোবাইলসহ দামী উপকরন পেতে দেখা যায়নি কাউকে। আর এভাবে সর্বশান্ত হচ্ছে গরীব জেলেরা ও এলাকার যুব সমাজ। যা থেকে প্রতিদিন আয় হচ্ছে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মিনি ক্যাসিনো’র এ আয় থেকে মাসোয়ারা পাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনসহ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ। এতে মৎস্যবন্দরের সচেতন নাগরিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওই মিনি ক্যাসিনো’র ভিডিও ক্লিপ আপলোড করে তা বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের পরও বন্ধ হচ্ছেনা এ জুয়া।

মহিপুর মৎস্যবন্দরের সচেতন নাগরিক এস আলম বলেন, মহিপুর আইন শৃংখলা কমিটির সভায় বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি’র উপস্থিতিতে এর আগে এই জুয়া নিয়ে কথা বলার পর কিছুদিন এটি বন্ধ ছিল। বর্তমানে প্রশাসনের নাকের ডগায় নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে এ মিনি ক্যাসিনো। এতে গরীব জেলেরা ও এলাকার যুব সমাজ সর্বশান্ত হলেও মাসোয়ারা পাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনসহ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ। তাই এটি বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শীঘ্র পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানান। তিনি বলেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এ জুয়া বন্ধে আমার ফেসবুকে এর ভিডিও আপলোড করে ষ্ট্যাটাস দিয়েছি।

মহিপুর মৎস্যবন্দরের আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি ফজলু গাজী বলেন,গত এক সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে এ জুয়া চলছে। এটি বন্ধে মহিপুর থানাকে অবগত করা হলেও তাদের টনক নড়েনি।

এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোন সংবাদ জানা নেই, তবে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহম্মেদ আলী বলেন, এ ধরনের কোন ইনফরমেশন জানা নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওটি আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়নি, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।