অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির গণশুনানি শেষ হয়েছে। পুলিশের চেকপোস্টে গুলিতে রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় রোববার গণশুনানিতে ৯ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য শোনে তদন্ত কমিটি।

এদিন সকাল ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের অদূরে এই গণশুনানি শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল পৌনে ৫টার দিকে। শুনানি শেষে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান বলেন, গণশুনানিতে সাক্ষ্য দিতে ১১ জন নাম নিবন্ধন করেছিলেন। তবে আমরা ৯ জনের স্বাক্ষ্য নিয়েছি। অন্য ২ জনকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনে হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদেরকে সাত কর্ম দিবস দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার কারণ এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তা নিয়ে কাজ শুরু করি। আমাদের যেখানে যেখানে যাওয়ার দরকার আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় গিয়েছি। আমরা ঘটনাস্থল তিনবার পরিদর্শন করেছি। আমরা এসব জায়গাগুলো রেকি করেছি। টেকনাফ থানার পুলিশ, ফাড়িঁর পুলিশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রর পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৬০ জনের সাথে আমরা কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনার তদন্তে গত ২ আগস্ট কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলিকে প্রধান এবং পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) ও সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরদিন ৩ আগস্ট কমিটি পুনর্গঠন করে চার সদস্য বিশিষ্ট করা হয়। এতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করা হয়। আর কমিটির সদস্য রাখা হয়, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাজাহান আলি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এর একজন প্রতিনিধি এবং সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি।

এদিকে এ ঘটনায় মেজর সিনহার বোনের করা মামলায় বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং দুই নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে। তারা ছাড়া আরও সাতজনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। আলোচিত এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।