ভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে জোর কুটনৈতিক তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আছেন বলেই ১৫ অগাস্ট হত্যাকা-ের বিচার হয়েছে, জাতির কলংক মোচন হয়েছে। সেই আত্মস্বীকৃত খুনিরা শত আশ্রয়-প্রশ্রয়েও প্রটেকশন পায়নি জনতার কাছে। আদালতের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলেছে খুনিরা। জনগণের ধিক্কার আর ঘৃণাই আজ খুনিদের প্রাপ্য।

যারা লুকিয়ে আছেন তাদেরও ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে, ইনশাল্লাহ। ইতোমধ্যে জোরদার করা হয়েছে কুটনৈতিক তৎপরতা।সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সপরিবারে জাতির পিতার হত্যাকা-কে মধ্যযুগীয় কায়দায় ডকট্রিন অভ নেসেসিটি কথা বলে যারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতা দিয়েছিল, তারা আজ অপপ্রচার চালায় দেশে ন্যায় বিচার নেই বলে। ন্যায় বিচার তো দূরের কথা, ২১ বছর তো আমরা বিচারই চাইতে পারিনি। সে অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেয়া হয়েছিল। তারা আজ মানবাধিকারের বুলি আওড়ায়।

কারা একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে? সেদিন প্রাইম টর্গেট ছিল বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ এর বুলেট ২০০৪ সনে ফিরে এসেছে গ্রেনেড হয়ে। যখন জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিলেন, আলামত নষ্ট করেছিলেন তখন আপনাদের ন্যায় বিচার কোথায় ছিল?
খুনিরা তাদের ষড়যন্ত্রের জাল এখনও ছড়িয়ে রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে এখনও ষড়যন্ত্র চলছে। তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠি। এদেশের রাজনীতিতে হত্যা, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র আর সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার তাদের হাত ধরেই। এখনও তারা সে অপচর্চা অব্যাহত রেখেছে। তাই বলব, পনের অগাস্টের নির্মম হত্যাকা- ও একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।
বিএনপির দুর্নীতি বিরোধী বক্তব্যের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দুর্নীতির কথা বলে। আপনাদের সময় পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়ে দেশের মানুষকে লজ্জা আর হতাশার সাগরে ডুবিয়েছিলেন। দুর্নীতির বরপুত্র হাওয়া ভবনের নামে প্রতিষ্ঠা করেছিল এক খাওয়া ভবন। কী খাননি আপনারা? খাম্বা থেকে শুরু করে এতিমের টাকা পর্যন্ত খেয়েছেন। আর আজ দুর্নীতির কথা বলেন!

এদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু পরিবার সততার উদাহরণ। শেখ হাসিনা যেমনি অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন, তেমনি যেকোনো হত্যাকা-ের বিচারেও তিনি অপরাধীর দলীয় পরিচয় খোঁজেননি। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখেছেন।মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম বক্তব্য দেন।