দক্ষিন বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবশ্যার প্রভাবে ফের সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে কলাপাড়ার বিভিন্ন গ্রাম তলিয়ে গেছে পানিতে। পুকুর-নালা, খাল-বিল টই-টুম্বুর হয়ে গেছে পানিতে। নিঁচু জমিতে অপেক্ষাকৃত বেশী পানি জমে যাওয়ায় রোপা আমন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্ষাকালীন সবজির ক্ষেতে পানি জমে বিভিন্ন স্থানে পঁেচ গেছে ক্ষেত-খামার। লাগাতার বষর্নে পাল্টে গেছে জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনপদ। বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ করে ট্রলার নিয়ে মৎস্য বন্দর মহিপুরের শিববাড়িয়া নদীতে আশ্রয় নিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অস্বাভাবিক জেয়োরের পানিতে বেঁড়িবাঁধের বাইরে নি¤œাঞ্চল এবং চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, সুধীরপুর, কমরপুরে বেঁড়িবাঁধ রয়েছে প্রচন্ড ঝুকিতে, লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়া এলাকার বিধ্বস্ত বেঁড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে গেছে বহু গ্রাম। প্রায় ৩ সপ্তাহর লাগাতার বর্ষনে স্থানীয় মানুষজনকে বাইরে তেমনটা বের হতে দেখা যায়না। কর্মহীন দিনমজুর অনেকে বেকার হয়ে পড়েছে। পৌরশহরসহ এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নের দোকান-পাট অনেকটাই বন্ধ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতি বৃষ্টির কারনে কাঁচা বাজরে কোন সবজি দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। যাও অল্প কিছু সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, তাও বেশীর ভাগই বিক্রি হচ্ছে চড়ামূল্যে। কাঁচা মরিচের মূল্য এমনিতেই বেশী, তারমধ্যে বর্ষার কারনে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে সবজি ব্যবসায়ীরা জানান।

জেলেরা জানান, আবহাওয়া খারাপের কারনে দীর্ঘ এক সপ্তাহ বেকার কাটাতে হচ্ছে। আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ায় মহাজনদের কাছ্ েলোনের বোঝা ভারী হয়ে যাচ্ছে বলে তারা জানান। দৈনিক আয়ের শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন সকালে বাড়ী থেকে বের হলে কোন না কোন কাজ পাওয়া যেত। কিন্ত ২ সপ্তাহের অধিক বৃষ্টি থাকায় কাজ পাওয়া যাচ্ছে না। সবজি চাষীরা জানান, জমিতে প্রচুর পরিমান বর্ষাকালীন সবজি রয়েছে, পানি জমে ক্ষেতের অধিকাংশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ সমবায়-সমিতির সভাপতি মো: আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, সাগর প্রচন্ড উত্তাল, নদ-নদীতে স্বভাবিক জোয়ারের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে পানি, সকল মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে নোঙ্গর করা রয়েছে। আবহাওয়া ঠিক হলে ট্রলারগুলো ফের সাগরে যাবে।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, অতি বর্ষনের কারনে ক্ষেতে পানি জমে থাকলে সে সকল ক্ষেত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে, বৃষ্টি কমে গেলে এসব ক্ষতির পরিমান নিরূপন করা সম্ভব হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

 

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি