নওগাঁর আত্রাইয়ের ছেলের মানসিক নির্যাতিতা সেই অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও। ছেলে ও ছেলে বউয়ের অবহেলায় ষাটরোর্ধ্ব অসুস্থ সেই বৃদ্ধা জোহরা বেওয়ার দায়িত্ব নিলেন আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ছানাউল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছানাউল ইসলাম জোহরা বেওয়ার অবস্থা সরেজমিন দেখার জন্য তার বাড়ি আত্রাই উপজেলার হাটুরিয়া গ্রামে যান । এ সময় তিনি অসুস্থ জোহরা বেওয়াকে এক বস্তা চাউল,ফলমূল ও চিরা দিয়ে, ইউপি সদস্য আফজাল হোসেনকে অসুস্থ বৃদ্ধা জোহরা বেওয়ার দেখা শোনার জন্য নির্দেশ দেন ।

গত বৃহস্পতিবার(১৩ আগষ্ট) বিকেলে বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমে ও নওগাঁ জেলার জনপ্রিয় ফেইসবুক পেইজ “রূপসী নওগাঁ ” পেইজে জোহরা বেওয়াকে নিয়ে অসহায় একটা বৃদ্ধা মায়ের মানবেতর জীবন যাপন শিরোনামে প্রতিবেদন ও ভিডিও প্রকাশ করে আত্রাই প্রেসক্লাবের সদস্য ও বাংলাদেশ অনলাইন রিপোর্টার্স ক্লাব আত্রাই উপজেলা শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক এবং নওগাঁ সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিফাত হোসাইন সবুজ।

সংবাদটি প্রকাশের পর ওই বৃদ্ধার জন্য অনেকে দুঃখ সমাবেদনা এবং তাকে সহযোগিতা করার জন্য মতামত প্রকাশ করেন। এদিকে ঘটনাটি নজরে আসলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম ছুটে যান মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন হাটুরিয়ার ওই বৃদ্ধার বাড়িতে।

একইসাথে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ দেখার পরে আত্রাই থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি নিজেই মোবাইল করে নির্যাতিতা এই মায়ের সর্বশেষ তথ্য নেন এবং তিনি ও চাল সহ খাদ্য সামগ্রী পাঠান ওই বৃদ্ধার কাছে।

স্থানীয়রা জানান, স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় গরীব হলেও সন্তানদের নিয়ে ভালোভাবেই দিন কেটেছে সৈয়দ আলী ও জোহরার দম্পতির।সৈয়দ আলী মৃত্যুবরণ করায়। সংসারে টানাটানি শুরু হয়। কিন্তু গর্ভধারিণী মাকে করতে হচ্ছে আজ মানবেতর জীবনযাপন । বয়সের ভার আর অসুস্থতার কারণে ছেলে ও ছেলের বউয়ের কাছে হয়েছে অপ্রিয়।তার পর প্যারালাইসিসে হয়েছে পুঙ্গু।

এদিকে জোহরার ছেলে বলেন, আমি সামান্য আয়ের মানুষ। টাকার অভাবে মায়ের ভালো চিকিৎসা করাতে পারছি না। সাংবাদিক এসেছিল তারা যাবার পর আমি চেষ্টা করছি মাকে যত্ন আদর করতে। ভরণপোষণের জন্য সরকার আইন করেছে জানতাম না সাংবাদিক আসাতে জেনেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম জানান বিষয়টি জানার পর আমি খুবই ব্যাথিত হয়েছি। আজ থেকে অসুস্থ জোহরা বেওয়ার চিকিৎসাসহ যাবতীয় ব্যয়ভার তিনিই বহন করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম বৃদ্ধা জোহরার বাড়ী পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)আত্রাই আরিফ মোর্শেদ মিশু ও স্হানীয় ইউপি সদস্য ও সাংবাদিক বৃন্দ।