মহিপুরে নির্মান কাজ শেষ হওয়ার এক বছর যেতে না যেতেই ভাঙতে শুরু করেছে মহিপুরের নিজামপুর, সুধীরপুর, কমরপুর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ। এক যুগের পানিবন্ধী অবস্থা থেকে এলাকাবাসী মুক্তি পেলেও নতুন করে দেখা দিয়েছে আবারো শংকা। পানি উন্নয়ন বোডের অপরিকল্পিত প্রকল্প প্রনয়নসহ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিন্মমানের কাজকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী।

২০০৭ সালে ঘুনিঝড় সিডরের আঘাতে ভেংগে যায় স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধ। এরপর কয়েক দফা পুন:নিরমান কাজ করা হলেও তা টেকসই না হওয়ায় সেই বছরই ভেংগে যায়। বছরের প্রায় ছয় মাস দু-দফা জোয়ারের পানিতে বন্ধী হয়ে পড়ে, সাগরের মোহনার কমরপুর, সুধীরপুর, নিজামপুর, পুরানমহিপুর, নজিবপুর পাচটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের নদীতে বিলীন হয়ে যায় ফসলি জমি, বসত ভিটা। অনাবাদী থাকে শতশত একর ফসলি জমি। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে পামি উন্নয়ন বোর্ড ৪৭/১ পোল্ডারে ২ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যায়ে চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৮৮৫ মিটার বাধের র্নিমান কাজ জুন ২০২০ সালে সম্পন্ন করে। যেখানে ৫টি প্যাকেজে ৪টি ঠিকাদার প্রতিঠান কাজ শুরু করে, স্থানীয়দের চোখে কাজে অনিয়ম ধরা পড়ায় তারা কাজের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়। তখন পানি উন্নযন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ বলেন, বাঁধ নির্মানে জিও ব্যগের ভিতরে থাকা বালু ও সিমেন্ট একমাসের ভিতরে জমাট বেঁধে যাবে। কিন্তু ৩০ জুন ২০২০ এ কাজ শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত তা জমাট বাধেনি কারন ব্যাগের ভিতরে বালুর থেকে সিমেন্টের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সরকারের কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বেরিবাধের নিজামপুর ও সুধীরপুরের গুরুত্বপূর্ণ আংশ মানহীন কাজের কারনে বছর না যেতেই বিলীন হতে বসেছে ।

স্থানীয হানিফ চৌকিদার বলেন, কাজের সময় আমরা অনিয়মের প্রতিবাদ জানাই কর্তৃপক্ষ তখন কর্নপাত করেনি। নুরজামাল হাওলাদার জানান, কাজ শেষ হইছে ৩ মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো ব্যাগের ভিতরে বালু জমাট বাধেনি যার খেসারত এখন গ্রামবাসীদের দিতে হচ্ছে। ভুক্তভোগি সালাউদ্দীন রাড়ী জানান, প্রতি বছরে সরকারিভাবে বেরিবাঁধ নির্মাণ করার জন্য মোটা অংকের বরাদ্দ আসে তাতে নামেমাত্র কাজ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা ভাগাভাগি করে খায়।

এ কাজের তদারকি কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয প্রকৌশলী মুসফিকুর রহমান শুভ বলেন, আমাদের জানামতে কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। তবে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যা আম্ফান-এর কারনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হইছে যা পূনরায নির্মান করে দেওয়া হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আ: ছালাম আকন বলেন, অনিয়ম তো চরম অনিয়ম তারা আবার বর্ষা মৌসুমে পানির মধ্যে কাজ করে, যা সবই পানিতে ভেসে গেছে। সুকনা মৌসুমে কাজ করা উচিত ছিলো। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরই বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী, এমপি, পাউবো’র অফিসে অফিসে বছরের পর বছর ঘুরে আমি হতাস, তাই আমি বঙ্গববন্ধু কন্যা, জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

 

রাসেল কবির মুরাদ , কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি