গাজীপুরে চাকুরীর সন্ধানে এসে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর রবিবার এক প্রবাসীর বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্কি থেকে বস্তাবন্দি এক নারীর গলা কাটা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির কেয়ার টেকারসহ ৩জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের নাম রাবেয়া আক্তার (২২)। সে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মন গ্রামের আব্দুল বারেকের স্ত্রী।

জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার এসআই সাখাওয়াত ইমতিয়াজ ও নিহতের স্বজনরা জানান, চাকুরির সন্ধানে গত কয়েকদিন আগে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে গাজীপুরে আসেন রাবেয়া। তারা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকায় চাচাতো বোনদের সঙ্গে স্থানীয় সবুরের বাড়িতে ভাড়া থাকে। সবুর স্থানীয় এক কারখানায় লোডারের কাজ করে। তার স্ত্রী বিভিন্ন কারখানায় চাকুরির খোঁজ করতে থাকে।

জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার ওসি মোঃ এমদাদ হোসেন নিহতের স্বজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, চাকুরির সন্ধান করতে গিয়ে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় রাবেয়ার। মোবাইল ফোনেও তাদের কথাবার্তা হতো। গত ২৩ আগস্ট রাতে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরতে স্বামীর দেরী হওয়ায় সম্পর্কীয় এক চাচীকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় একটি দোকানের সামনে বসেছিলেন রাবেয়া। এসময় ১০ মিনিটের মধ্যে ফিরে আসার কথা বলে চাচীকে বসিয়ে রেখে রাবেয়া সেখান থেকে চলে যান। এরপরই তিনি নিখোঁজ হন। এদিকে গভীর রাতে স্বামী বারেক বাসায় ফিরে রাবেয়াকে না পেয়ে স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। রাবেয়ার সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার শনিবার বিকেলে কোনাবাড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।

ওসি আরো জানান, এদিকে শনিবার রাতে দুর্গন্ধের সূত্র খুঁজতে গিয়ে স্থানীয়রা প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের দেওয়ালিয়াবাড়ি এলাকার বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্কিতে একটি বস্তা ও পাশে একজোড়া স্যান্ডেল ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে রবিবার ভোরে ট্যাঙ্কি থেকে বস্তাবন্ধি রাবেয়ার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। নিহতের গলার সামনের অংশ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা ছিল। গুম করার উদ্দেশ্যে হত্যাকারীরা নিহতের লাশ বস্তাবন্দি করে ওই সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেয়। বস্তাবন্দি লাশটি যাতে ভেসে না উঠে সেজন্য তারা ইট বেঁধে লাশের বস্তাটিকে চাপা দিয়েছিল। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির কেয়ার টেকার মোস্তফাসহ ৩জনকে আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।