দেশে আগস্ট মাসে ৩০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৭৯ জন এবং আহত ৩৬৮ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬৬ জন এবং শিশু ৩২ জন।বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সামাজিক সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১২১ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১২৯ জন। দুর্ঘটনায় ৮১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন এবং যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৭ জন। এছাড়া এ সময়ে ১৩ টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত, ৩২ জন আহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৬টি পৃথক রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ জন।

দুর্ঘটনায় বাস যাত্রী নিহত হয়েছেন ১৬ জন, ট্রাক যাত্রী ৮ জন, পিকআপ যাত্রী ১৫ জন, কাভার্ডভ্যান যাত্রী ৩ জন, মাইক্রোবাস যাত্রী ১৩ জন, প্রাইভেটকার যাত্রী ১৭ জন, ট্রলি যাত্রী ৩ জন, লরি যাত্রী ১ জন, ট্রাক্টর যাত্রী ২ জন, জীপ যাত্রী ১ জন, সিএনজি যাত্রী ১০ জন, ইজিবাইক-অটোরিকশা যাত্রী ৪৬ জন, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র যাত্রী ২১ জন, রিকশা যাত্রী ৬ জন, লেগুনা যাত্রী ৩ জন এবং বাই-সাইকেল আরোহী ৪ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে শিক্ষক ১১ জন, চিত্রশিল্পী ১ জন, পর্বতারোহী ১ জন, পুলিশ সদস্য ১ জন, গ্রাম পুলিশ ১ জন, বিমান বাহিনীর কর্মচারী ১ জন, পল্লী বিদ্যুতে চাকরিজীবি ১ জন, স্কুল প্রহরী ১ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৩ জন, ঔষধ ও অন্যান্য পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ৯ জন, রাজমিস্ত্রী-কাঠমিস্ত্রী ২ জন, মিল শ্রমিক ২ জন, পোশাক শ্রমিক ৮ জন, মাছ-সবজি ও গরু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী ২৯ জন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ২ জন এবং শিক্ষার্থী ৫৮ জন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন ও ঢাকা কলেজের ১ জনসহ)। এছাড়া ফরিদপুর সদর উপজেলার এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজ কর্মএলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ৭৩ টি দুর্ঘটনায় নিহত ৮৪ জন। সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে। ২২ টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৯ জন।

একক জেলা হিসেবে ময়মনসিংহে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ জেলায় ১৬ টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত। সবচেয়ে কম মুন্সিগঞ্জে। এখানে ১ টি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, গত জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। জুলাই মাসে ২৯৩ টি দুর্ঘটনায় ৩৫৬ জন নিহত হয়েছিলেন। এই হিসাবে আগস্ট মাসে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি বেড়েছে। সড়ক দুর্ঘটনারোধে নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ এবং গণপরিবহন খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা- উভয়ই জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।