ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটক থেকে তাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে পুলিশ। যার সিসি টিভি ফুটেজ বুধবার উদ্ধার করা হয়েছে। যা এখন সবার হাতে হাতে পৌছে গেছে। লাঞ্ছিত চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি পরপর দুই বার নৌকা প্রতিক নিয়ে সারুটিয়া ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। লাঞ্ছিত চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মামুন অভিযোগ করে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নে আমার প্রতিপক্ষ জুলফিকার কাইসার টিপুর সাথে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে পুরাতন বাখরবা গ্রামের মিনান নামের আমার এক কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে প্রতিপক্ষরা। মিনান নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বাড়ী ফিরছিলেন। এছাড়া ঐ রাতেই প্রতিপক্ষরা একই গ্রামের মওলার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে শৈলকুপা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। আমি রাতে আহতদের হাসপাতালে দেখতে যায়। এসময় রাত আনুমানিক ১২টার দিকে শৈলকুপা থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। আমার সাথে থাকা কর্মী ও স্থানীয়দের পুলিশ ধরে গাড়ীতে তোলে। আমি এগিয়ে যাওয়া মাত্রই এসআই সাখাওয়াত আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় ও এসআই রফিক এবং এএসআই রেজওয়ানুলসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা লাথি ঘুষি মেরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ধাক্কাতে ধাক্কাতে জোর পূর্বক আমাকে গাড়ীতে তোলে। আমার শরিরের কাপড় টেনে হেচড়ে ছিড়ে ফেলে এবং বলতে থাকে ওসি স্যারের নির্দেশ আছে তোকে সাইজ করতে হবে। পরে আমার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ও দুজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশ তাদের দেখে আমাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দেয়। বাকীদেরকে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন সকালে মামলা দিয়ে তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করে। অথচ ঐ রাতেই ওসি আমাকে ফোন দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, আমি হাসপাতালে থাকলে সবার আগে তোর হাতে হাতকড়া পড়তো। তোর কপালে কষ্ট ছিলো। এক সপ্তাহের মধ্যে তোর রাজনীতি শেষ করে দেবো, তোকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেব। এসব কথা শেষে গালিগালাজ করতে করতে তিনি ফোন কেটে দেন। যার কল রেকর্ডিং আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও হাসপাতালে পুলিশের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজও আমি সংরক্ষণ করেছি। সিসি টিভি ফুটেজ ও কল রেকর্ডিং শুনলে আমার বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যাবে। চেয়ারম্যান আরো অভিযোগ করে বলেন, শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম আমার প্রতিপক্ষের সাথে হাত মিলিয়ে পক্ষ পাতিত্ব করছেন। বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করে চলেছেন। আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ না থাকা স্বত্ত্বেও পুলিশ আমাকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওসি আমাকে উল্টো দোষারোপ করেন, আমি নাকি পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ করেছি। নিজের দোষ ঢাকতে ওসি আটকৃতদের কাছ থেকে জোর পূর্বক এ ধরনের জবানবন্দি নিয়েছেন বলেও তিনি জানান। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি এ ঘটনার বিচার দাবী করেছেন। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ ঘটনার পর চেয়ারম্যানকে থানায় ডাকা হয়েছে, কিন্তু তিনি আসেননি।