বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছাড়া কেউই রক্ষা পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে-একাংশ) আয়োজিত মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তর্ধান দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই ভার্চুয়াল আলোচনার মধ্য দিয়ে এই ম্যাসেজটা সকলকে আপনারা (সাংবাদিকরা) দিতে পারেন যে, এখন থেকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া দেশকে, গণতন্ত্রকে, সাংবাদিকতাকে- কাউকেই রক্ষা করা যাবে না, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও রক্ষা করা যাবে না। আমি একটা কথাই বলব, অবস্থা বদলে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। বদলে দেওয়ার একটাই পথ যে, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট যে সরকার, এই সরকারকে সরাতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই অবস্থা থেকে যদি মুক্তি পেতে হয় আমাদের ঐক্য দরকার হবে। যেটা আমরা চেষ্টা করছি সবসময়। একটা ঐক্য সৃষ্টি করেই আমাদেরকে এগুতে হবে। আসুন গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার সবাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাই, সব রাজনৈতিক দলগুলোকে একখানে আনার চেষ্টা করি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের যে অধিকার, আমরা ১৯৭১ সালে যেটার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য, গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য সেটাকে ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে।আওডামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের কেমিস্ট্রি হচ্ছে আমি ছাড়া আর কেউ নেই। তারা যেকোনো মূল্যে একাই ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রকে পরিচালনা করবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চলনায় বাংলাদেশ জামাডাতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিডা গোলাম পরওডার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীসহ সাংবাদিক নেতারা বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জাতিকে আবদ্ধ করে রাখার জন্য যেসব আইন করা দরকার, বর্তমান সরকার তা করেছে। উদ্দেশ্য একটাই, যেন ভিন্নমত কথা বলতে না পারে এবং তাদের অপকর্মগুলো জনগণের কাছে প্রকাশিত না হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে যেটা চলছে আমার কাছে মনে হড, সেটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নড। ১৯৭২ সালে তারা যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখনো তারা বিভিন্ন গণবিরোধী আইন করার মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠরোধ করেছে। আমাদের সেই আন্দোলন-সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে হবে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, এরা মোটেও শক্তিশালী নয়। যারা দিনের ভোট রাতে করে মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে টিকে থাকে, তারা কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না।বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমার কাছে মনে হয়, সারা বিশ্বে কর্তৃত্ববাদী সরকারের প্রবণতা বেড়েছে এবং বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। গণতন্ত্র এখন আগের জায়গায় নেই। বৈশ্বিক কারণে গণতন্ত্র পেছনের দিকে চলে গেছে। আপনারা লক্ষ করবেন যে যুক্তরাষ্ট্রকে গণতন্ত্রের আঁতুড়ঘর বলা হয়, সেখানে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কীভাবে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমেরিকার মতো ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছ থেকে যেটা কখনো কাম্য না।
সাংবাদিকদের গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও আপনারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রভাগে আছেন। আসেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে পরাজিত করে একটি জবাবদিহিমূলক জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিডনের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, মরহুম সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী একটা কথা বলতেন, আওয়ামী লীগ এমন এক বাক্স, যেখানে ঢোকালে রাজাকারও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বের হয়।