যার যে রাজনীতি, সেটা স্পষ্ট করে লড়াইয়ে নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডের শিশু কল্যাণ মিলনায়তনে ‘উপনির্বাচন-নির্বাচন কমিশন ও বর্তমান সরকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পরিকল্পনা ও ছক ছাড়া কোনো আন্দোলনে বিজয়ী হওয়া যায় না। তাই যার যে রাজনীতি সেটি স্পষ্ট করে গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে নামতে হবে। যাদের দয়া-মায়া নাই তাদের বিরুদ্ধে ‘পুত পুত’ করে আন্দোলনে বিজয়ী হওয়া যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে রাজপথে।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি তৈরি হলে রাজনৈতিক দলের ঐক্যের জন্য জনগণ অপেক্ষা করবে না। মানুষ পরিবর্তন চায়, সাহস করে রাজপথে নামতে হবে। ঘরে বসে আন্দোলনের কথা বললে হবে না। আন্দোলনের পটভূমি রচনা করতে হবে, নতুন পথের জন্য নতুন করে ভাবতে হবে।’

মান্না বলেন, সাহস করে জনগণকে উজ্জ্বীবিত করে গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়ে রাজপথে নামার কোনো কিল্প নাই। বেগম জিয়া সরকারের অনুকম্পায় মুক্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাদের এই বক্তব্যে কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না তার দল। কেন?

উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সকল উপনির্বাচনে বিএনপি এককভাবেই অংশ নিচ্ছে। এতে বিএনপিরও যেমন কোনো লাভ হবে না, জনগণেরও কোনো লাভ হবে না। এই সকল উপনির্বাচনে বিএনপি দুয়েকটি আসনে জিতলেও জনগণের কিছু আসে যায় না।’

সংগঠনের সভাপতি মুহম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সেকুল ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী প্রমুখ।

এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠী সব সময় বিরোধী মতকে দমন করতে আইনের অপবব্যাহার করে থাকে। আমাদের সকল কালা কানুনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ডিজটাল আইন নামক কালা কানুন বাতিলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, ‘উপনির্বাচন সরকার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকার ও ইসির সদিচ্ছা থাকলে তাদের হারানো ইমেজ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু ব্যর্থ-অপাদার্থ নির্বাচন কমিশন তা পারবে বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে না।’

বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, ‘জাতি এক চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সরকারি দলের নেতা-কর্মী আর কর্মচারীরা পুরো দেশে লুটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিতা করেছে। যখন ভোঠাধিকার ধ্বংস হয়ে যায়, গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়, ন্যায় বিচারের অভাবে সমাজে অস্থিরতা বিরাজ করে তখন রাষ্ট্র ও সমাজ লুটেরাদের হাতে নিয়ন্ত্রিত হয়।

তিনি বলেন, যারা ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফলাফর বর্জন করল তারাই আবার সংসদে গেল। তারাই এখন উপনির্বাচনে যাচ্ছে। এই ধরনের দ্বীচারিতা জনগণ কখনো গ্রহণ করে না। ফলে তাদের ওপর জনগণের আস্থাও থাকে না। এই সরকারের পরিবর্তন ঘটলে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। রাজনৈতিক এজেন্ডা নির্ধারণের মধ্য দিয়েই দুর্নীতি ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবার কোনো সম্ভবনা নেই। সরকার পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।