লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায় ট্রাকের সাথে ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটে। এতে ট্রাকের কোন ক্ষতি না হলেও ট্রেনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ২০ জন আহত হয়। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলা বুড়িমারী স্থলবন্দরের অদুরে উফারমারা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ট্রেনের ভেতর থেকে হুড়োহুড়ি করে নামার সময় চালকসহ ২০ জন যাত্রী আহত হয়েছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও একাধিক ট্রেন যাত্রী জানান, পাথর বোঝাই ট্রাকটি রেললাইনের নিকট থেকে সড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এ সময় লালমনিরহাটগামী চলন্ত ট্রেনটি সজোরে ট্রাকটির পেছনের অংশে ধাক্কা দেয়। এতে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। সংঘর্ষে ট্রেনটির ক্ষয়ক্ষতি হলেও ট্রাকটির কোনো ক্ষতি হয়নি।

বুড়িমারী ও পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টারের দায়িত্বে থাকা মোকসেদ আলী জানান, বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে লালমনিরহাট বিভাগীয় সদর দফতর দিয়ে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ছেড়ে আসা বুড়িমারী কমিউটার (৬৬ ডাউন) ট্রেনটি আউটার সিগন্যাল পার হওয়ার পড়েই রেললাইনের ধারে পাথর বোঝাই একটি ট্রাকের সাথে ট্রেনের সাথে ধাক্কা লাগার সাথে সাথে লোকোমোটিভের একটি সাইড দুমড়ে মুচড়ে যায়। এছাড়াও লোকোমোটিভের পরের বগিটির কিছু অংশ ও চতুর্থ নম্বর বগিটির একটি সাইড মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চালক জহুরুল হক(৫২) বাম গাল ও বাম হাতের কয়েকটি স্থানে কাচের আঘাতে কেটে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তবে ট্রাকটির তেমন কিছু হয়নি।
লোকো মাস্টার জহুরুল হক জানান,‘আমি সতর্ক না হলে হয়তো আজ লোকোমোটিভের ভেতরেই চাপা পড়ে মরতে হতো । কিন্তু মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত ও কৌশলের কারণে বেঁচে গিয়েছি। ট্রেনটিকেও সুরক্ষিত রাখতে পেরেছি।’
তিনি আরো জানান, ‘রেলওয়ের জায়গার কোনো অভাব নেই। তাহলে রেললাইনের ধারটি কেন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন থেকে উফারমারা পর্যন্ত রেললাইনের দুইধারে এমনভাবে লিজ হয়েছে। প্রায় দুই কিলোমিটার রেললাইনের উপর পাথর ব্যবসার মাঠ তৈরি হয়েছে। যেখানে প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক পাথর লোড-আনলোড করা হয়। আজও ট্রাকটি পাথর লোডিং শেষে ট্রেন আগমন দেখে সড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ট্রাক চালক মোড় নিতে গিয়ে আচমকা প্রথমে লোকোমোটিভে আঘাত হানে এবং পরে ট্রাকটি দাঁড়িয়ে থাকার কারণে ট্রেনের আরো দুইটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে আমরা সকলে বড় ধরনের একটি দূর্ঘটনা থেকে সবাই রক্ষা পেয়েছি।’
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার তাপস কুমার দাস জানান, ‘পাটগ্রাম ও বুড়িমারী রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার মোকসেদ আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’