পদার্থ বিজ্ঞানে তাপীয় আয়নবাদ তত্ত্বের প্রবর্তক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ড. মেঘনাদ সাহার ১২৭তম জন্মদিন মঙ্গলবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গাজীপুরে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার গাজীপুর জেলায় কালিয়াকৈর উপজেলার বলিয়াদী শেওড়াতলীতে তাঁর পৈত্রিক ভিটায় প্রার্থনা সভাসহ খাবার বিতরণ করা হয়। স্থানীয়দের উদ্যোগে সকালে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

১৮৯৩ সালে ৬ অক্টোবর গাজীপুরের নিভৃত গ্রাম কালিয়াকৈরের শেওড়াতলীতে জন্মগ্রহণ করেন খ্যাতিমান এই বিজ্ঞানী। প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি, বজ্রপাত ও দুর্যোগের সময় তাঁর জন্ম হয়। এজন্য ঠাকুর মা ঝড়বৃষ্টির দেবতার নাম অনুসারে তাঁর নাম রাখেন মেঘনাদ। তাঁর বাবা জগন্নাথ সাহা বালিয়ারী এলাকায় মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। মায়ের নাম ছিল ভুবনেশ্বরী। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও জগন্নাথ সাহার ছিল ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ে। ৮ ভাই বোনের মধ্যে মেঘনাদ সাহা ছিলেন ৫ম। দরিদ্র ঘরে জন্ম হলেও অন্যের প্রতিপালিত হয়ে মেঘনাদ ১৯০৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পূর্ববঙ্গে ১ম স্থান অধিকারসহ ১৯১৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত শাস্ত্রে ১ম শ্রেণীতে ২য় স্থান অধিকার করেন। বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর ছাত্র ও সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সহপাঠী মেঘনাদ সাহাকে পদার্থ বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে অসামান্য গবেষণাসহ পরমাণুর গঠন ও পদার্থের ভৌত ধর্মাবলী বিষয়ে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন বিশ্বখ্যাতি এনে দেয়। ১৯২০ সালে মেঘনাদ সাহার বিখ্যাত তাপ আয়ন তত্ত্ব প্রকাশিত হয়। এই তত্ত্বের সাহায্যে তিনি সূর্য ও তারার আভ্যন্তরীন অবস্থা বিশ্লেষন করেন।

১৯৫৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই প্রথিতযশা বিজ্ঞানী পরলোকগমন করেন। তাঁর মৃত্যুর ৬৪ বছরেও শেওড়াতলী গ্রামে তার ভিটেমাটি ও স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষিত হয়নি। নেওয়া হয়নি তেমন কোন উদ্যোগ। ১৯৪০ সালে তিনি তাঁর জীবদ্দশায় বলিয়াদী শেওড়াতলীতে মায়ের নামে ভূবনেশ^রী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।