মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের আগমুহুর্তে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তাই জেলার ছোট বড় শতাধিক মাছ ঘাটে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য। নাওয়া-খাওয়া ভুলে ইলিশা ধরা আর মোকামে চালান করা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা।

এদিকে শেষ মুহুর্তে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা মেলায় জেলেরা খুশি। কিন্তু দু’দিন পরেই আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারনে মহাজনের ধারদেনা পরিশোধ নিয়ে হতাশ জেলেরা। ভোলার ইলিশা, তুলাতুলি, ভোলার খাল, দৌলতখানের চকিঘাট, হাকিমুদ্দিন মাছঘাট সহ প্রায় ১০টি মাছ ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঘাটগুলোতে জেলেদের হাকডাক। সবাই ব্যাস্ত ইলিশ শিকারে। দু’দিন পরেই মা ইলিশ রক্ষা অভিযান। তাই নষ্ট করার মতো সময় নেই তাদের হাতে। নদীতে জাল ফেলে যে মাছ পাচ্ছেন তা আড়তে রেখে আবার ছুটছেন নদীতে। নিষেধাজ্ঞার আগ মুহুর্তে ইলিশের দেখা মিলেছে তাদের জালে। দীর্ঘ অপেক্ষার কিছুটা অবসান ঘটিয়ে ঘাটগুলোতে ফিরে এসেছে কর্ম ব্যস্ততা। এই ঘাটগুলোতে গত কয়েক সপ্তাহ আগেও জেলে ও ব্যবসায়ীদের কোনো কর্ম তৎপরতা ছিলো না। ভরা মৌসুমে সাগরে প্রচুর ইলিশ মিললেও ভোলার মেঘনা- তেতুলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা পায়নি জেলেরা।

এদিকে ইলিশের দাম বেশি হওয়ায় জেলেরা যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি মৎস্য আড়ৎদারগনও তাদের লোকসান পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

ইলিশা ঘাটের জেলে ইসমাইল মাঝি, খলিল মাঝিসহ ১০-১২জন জেলে জানান, প্রতি বছরেই আকাল কাটিয়ে নদীতে যখন ইলিশ আসতে শুরু করে তখনই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এতে করে আমরা ক্ষতির মধ্যেই থেকে যাচ্ছি। তাই অভিযান আরো ১৫ দিন পিছিয়ে দেয়ার দাবি জানান তারা। সেই সাথে সকল জেলেদেরকে সরকারি সহায়তার চাল দেয়ার দাবিও করেন তারা।

আড়তদার মো. শাহাবুদ্দিন, রুবেল, ইউনুছসহ ৬-৭ জন ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘ দিন নদীতে মাছ না থাকার কারনে আমরা ব্যবসায়ীরা জেলেদেরকে লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে বেকার বসে ছিলাম। গত কয়েক দিন ধরে নদীতে মাছের দেখা মেলায় কিছুটা ক্ষতি পুসিয়ে নেয়ার আশা ছিলো। কিন্তু ১৪ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হলে এবছর লোকসানের মুখে পরতে হবে আমাদের। ভোলার মৎস্য কর্মকর্তা এস. এম. আজহারুল ইসলাম জানান, বর্তমানে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ইলিশের উৎপাদনের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। এ বছর ভোলা জেলায় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৬৫ হাজার মে. টন। মৌসুমের প্রথম ৩ মাসেই ধরা পড়েছে প্রায় ৫৫ হাজার মে. টন ইলিশ।