গাজীপুরে পুলিশের মহানুভবতায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন এক রিক্সা চালক। রবিবার গভীর রাতে যাত্রীবেশে ছিনতাইকারীরা ওই রিক্সা চালকের গলা কেটে তার ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। গুরুতর অবস্থায় তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহতের ভাতিজা মোঃ আসলাম ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকের জেনারেল মুসা মার্কেট এলাকায় স্বপরিবারে ভাড়া বাসায় থেকে এলাকায় রিক্সা চালাতেন আব্দুল গফুর (৪৫)। তিনি কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার নাজিম খান বরনচর এলাকার মৃত পনির বেপারীর ছেলে। রবিবার রাত ১১টার দিকে যাত্রীবেশে দুই সশস্ত্র ছিনতাইকারী গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইল এলাকার কাশেম কটন মিলের ১নং গেইটে যাওয়ার কথা বলে মৌচাক থেকে গফুরের রিক্সা ভাড়া করে রওনা হন। ওই দুই যাত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী রাত সাড়ে ১১টার দিকে গফুর রিক্সাটি নিয়ে ১নং গেইট অতিক্রম করে তুরাগ নদীর পাশে একটি নির্জনস্থানে পৌছেন। এসময় রিক্সাটি থামিয়ে ছিনতাইকারীরা গফুরকে জাপটে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার গলায় আহাত করে। এতে গফুরের গলার বেশ কিছু অংশ কেটে যায়। রক্তাক্ত গফুর আত্মরক্ষার্থে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন। এসময় এলাকাবাসি এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।

জিএমপি’র কোনাবাড়ি থানার ওসি এমদাদ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ গুরুতর আহত রিক্সা চালককে স্থানীয় পপুলার হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে গফুরের প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে গফুরকে সেখানে রক্ত দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে মুমূর্ষাবস্থায় তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে (সিন শিন জাপান হাসপাতাল) নেওয়া হয়। কিন্তু গফ’রের পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার ব্যায় পরিশোধ করা সম্ভব নয় ভেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসা করতে অনীহা প্রকাশ করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যায় পরিশোধের আশ্বাস দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহত রিক্সা চালকের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন। এসময় ওই রিক্সা চালকের প্রাণ বাঁচাতে কয়েক দফায় পুলিশের আরো ৩/৪জন সদস্য তাকে রক্ত দেন। তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে রিক্সা চালকের পরিবারকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অর্থ ও খাবার সহায়তা দিয়েছেন পুলিশের কয়েক সদস্য।

জিএমপি’র কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আহত ব্যক্তিটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সদস্যরা আহত ব্যক্তিকে রক্ত না দিলে আহত ব্যক্তির প্রাণ বাঁচানো দুষ্কর হয়ে যেতো। এ মুহুর্তে আমাদের প্রধান দায়িত্ব হলো মরণাপন্ন ব্যাক্তিকে প্রাণে রক্ষা করা। এর পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা। এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় থানায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।