এক সময় স্বপ্নের শহর রাজধানী ঢাকা শহরে থাকতেন। কাজ করতেন রাজমিস্ত্রী হিসাবে। পরিবার পরিজন ছেড়ে থাকতে হতো এমন ভাবনার এক পর্যায়ে তিনি চলে আসেন গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বড়পই গ্রামে। এরপর নিজ গ্রামের মাঠেই শ্রম দেওয়ার সীদ্ধান্ত নেন জলিল।

এরপর থেকেই জলিল কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন এবং এক পর্যায়ে তিনি জমানো টাকায় পৌনে তিন বিঘা জমি ইজারা (বছর চুক্তিতে) নিয়ে রানী জাতের করলার আবাদ শুরু করেন তিনি এতেই ভাগ্য বদলে যায় এক সময়ের রাজমিস্ত্রী আব্দুল জলিল এর। বাজারে করলার ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি। করলা চাষি আব্দুল জলিল দৈনিক- জাগো জনতাকে জানান, তিনি প্রায় ১৩ বছর যাবত ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেছেন। সেখানে স্বল্প পরিসরে খাবার জন্য শাক-সবজির আবাদ করতেন। মাঝের মধ্যে বাড়ি আসা-যাওয়া করতে হতো। এবার আর ঢাকায় কাজ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এজন্যই তিনি জমি বন্ধক নিয়ে গ্রামে শাক-সবজি চাষ করছেন। দুই দফায় পৌনে তিন বিঘা জমি ইজারা নিয়েছেন। ২২ কাঠা জমি ২ বছরের জন্য নিয়েছেন ৩২ হাজার টাকায়। বাকি জমি ১৪ হাজার এবং ১৬ হাজার টাকা বছর। মোট জমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। এ বছর এক বিঘা জমির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, জমি প্রস্তুত করে গত ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে জমিতে করলার চারা রোপণ করেন। মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে এরই মাঝে মাচা তৈরি করে চারা রোপণ করেন। এক বিঘা জমিতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে মাঁচা তৈরিতে এবং শ্রমিকসহ খরচ হয়েছে ২৬-২৭ হাজার টাকা। মোট জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। চারা রোপণের ২০ দিনের মধ্যে ফুল এবং ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফল ধরা শুরু হয়।
বর্তমানে সপ্তাহে ২ দিন ক্ষেত থেকে প্রায় সাড়ে ৭মণ করলা উঠানো হয়। যেখানে প্রথম দিকে ৩ থেকে ৩ হাজার ২ শত টাকা মণ পাইকারী মূল্যে বিক্রি হলেও তা কমে বর্তমান বাজারে করলা বিক্রি হচ্ছে ২৪শ-২৬শ টাকা মূল্যে প্রতি মণ। সর্বোচ্চ সাড়ে তিনমাস পর্যন্ত মাচায় করলা থাকবে। এরপর পটল, সব খরচ বাদ দিয়ে করলা মৌসুমে সাড়ে তিন মাসে তার প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে বলেও আশাব্যাক্ত করেন করলা চাষি আব্দুল জলিল।

ইতোমধ্যে করলার মধ্যে পটলের গাছ লাগানো হয়েছে। করলা শেষ হওয়ার পর পটলের গাছ মাচায় উঠে যাবে। একই মাচায় পটলের আবাদ করা হলে মাচা তৈরির খরচটা লাগবে না। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার কারণে সবজি আবাদ নষ্ট হয়েছে। এ কারণে দাম কিছুটা ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

মো:সোহেল রানা